দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভাল আয়োজন

বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত বুসান শহরে ১৩ জুন হতে সপ্তাহ ব্যাপী ‘বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভাল’ এর আয়োজন করা হয়েছে।

বুসান শহরের পাঁচ তারকা হোটেল প্যারাডাইস-এ বাংলাদেশের প্যান প্যাসিফিক সোনার গাঁ হোটেলের সহযোগিতায় ১৩-১৯ জুন ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত এ ফুড ফেস্টিভাল চলবে। ফুড ফেস্টিভাল উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ প্যান প্যাসিফিক সোনার গাঁ হোটেল থেকে তিনজন অভিজ্ঞ রন্ধন বিশেষজ্ঞ/রাঁধুনীকে দূতাবাস কর্তৃক বুসানে নিয়ে আসা হয়েছে।

১৩ জুন সন্ধ্যায় দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভালের শুভ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুসান মেট্রোপলিটন সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক রাষ্ট্রদূত মি. উ কিউং-হা।

তাছাড়া অনুষ্ঠানে বুসানে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের অনারারি কনসাল জেনারেল, বুসান চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ, কোরিয়া এক্সপোর্ট এ্যান্ড ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সম্মানিত বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রদূত তার উদ্বোধনী বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের মানুষের অতিথি পরায়ন হিসেবে খুবই সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি অন্যতম অনুষংগ হচ্ছে এর বৈচিত্রময় খাদ্য সামগ্রী এবং এর রন্ধন প্রণালী।

বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মুখরোচক খাদ্য সামগ্রী দ্বারা আপ্যায়ন করা বিষয়টি সুদূর অতিতকাল থেকে প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য সামগ্রীর সুনাম ও চাহিদা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এক্ষেত্রে সেসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বাংলাদেশের সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ এ মুখরোচক খাদ্য সামগ্রীর স্বাদ এবং বহুমাত্রিকতা কোরিয়া নাগরিকদের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভালের আয়োজন করা হয়েছে।

আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধান অতিথি মি. উ কিউং-হা তার বক্তব্যে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক এ সুন্দর আয়োজনের জন্য রাষ্টদূতকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার জনগণের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো গভীরতা লাভ করবে।

উদ্বোধনের পর আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ভুনা খিচুরী, বিফ তেহারী, চাপলী কাবাব, চিকেন তান্দুরী কাবাব, চিকেন রেশমী কাবাব, শাহজাহানী চিকেন, বীফ কালা ভুনা, চিংড়ী মালাই কারী, মোগলাই পরোটা, পাটিশাপটা পিঠা, শাহী জোরদা ইত্যাদি খাবার সামগ্রী দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভাল উপলক্ষ্যে কোরিয়া নাগরিকদের বাংলাদেশি খাদ্য সামগ্রীর ওপর লিফলেট, ব্রশিয়ার ইত্যাদি বিতরণ করা হয়।

বাংলাদেশের ফুড ফেস্টিভাল নিয়ে আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও প্যারাডাইজ হোটেলে আগত কোরিয়ান নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউলের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভালের আয়োজন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন ধারা সূচনা করবে এবং এ সম্পর্ক- উত্তরোত্তর আরো গভীর হবে বলে আশা করা যায়।

এসএইচ-০৯/১৫/১৯ (প্রবাস ডেস্ক)