৪৮ শতাংশ প্রবাসী চাকরি হারিয়েছেন

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত হওয়ার আগে যারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ফিরেছেন, নানা কারণে তাদের আর ফেরা হয়নি কর্মস্থলে।

কর্মস্থলে ফিরতে না পারার কারণগুলোর মধ্যে দেশে ফেরা প্রবাসীদের মধ্যে অনেকেরই ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হওয়া, আকাশপথ বন্ধ থাকা অন্যতম।

আবার অনেকেই করোনার কারণে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় বিভিন্ন দেশ থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। এমন এগারোশ’র বেশি শ্রমিকের ওপর করা এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর করোনার প্রভাবে ফিরে আসা কর্মীদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ চাকরি হারিয়েছেন। আর চাকরিতে ছিলেন যারা, তাদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মীর আগের চেয়ে বেতন কমেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পেয়েছে প্রবাসীদের নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরু। ‘অ্যাড্রেসিং সিস্টেম্যাটিক চ্যালেঞ্জেস অব ওয়েজ থেফট: বাংলাদেশি কোভিড-১৯ রিটার্নিজ ফ্রম দ্য গালফ’ শীর্ষক গবেষণাটি করে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি অব মাইগ্রেশন (বিসিএসএম) ও রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।

ফিরে আসা ১ হাজার ১৬০ জন প্রবাসী কর্মীর ওপর যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
বুধবার এক অনলাইন অনুষ্ঠানে গবেষণাটির তথ্য তুলে ধরে বিসিএসএমের চেয়ার ও রামরুর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সিআর আবরার।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক কোনো মানদণ্ড না মেনে অনৈতিকভাবে চাপ দিয়ে কর্মীদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্মী পাঠানো দেশটিকে চাপ দেওয়া হয়েছে তাদের কর্মী ফিরিয়ে নিতে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বেতন হারানো কর্মীদের তালিকার শীর্ষ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর আছে কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, ওমান ও বাহরাইন।

প্রবাসী কর্মীরা করোনাকালে বেতন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিকসহ গড়ে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮৯ টাকা করে হারিয়েছেন। করোনা মহামারির প্রভাবে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের ৮৫ শতাংশ পুরুষ কর্মী।

এর মধ্যে পুরুষ কর্মীরা গড়ে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ও নারী কর্মীরা গড়ে ৯৭ হাজার টাকা করে বেতন হারিয়েছেন।

বিসিএসএম ও রামরুর অনলাইন অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বায়রার মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরী, বিএমইটির সাবেক পরিচালক ড. নুরুল ইসলাম, বিএনএসকের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, মাইগ্রেশন ফোরাম এশিয়ার জনা ইউ, অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ প্রমুখ।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে করোনা মহামারির সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়ে তিন লাখ পুরুষ ও ৫০ হাজার নারী বাংলাদেশি অভিবাসীকে জোর করে ফেরত পাঠানো হয়। ফিরে আসা এমন বাংলাদেশিদের মধ্যে কাজ খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে ৭০ শতাংশের।

এসএইচ-০৭/১২/২১ (প্রবাস ডেস্ক)