মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো নিয়ে আশঙ্কা

প্রায় সাড়ে তিন বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর সুযোগ মিললেও, আবারও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে শ্রমবাজারটি মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা নিয়ে গোল বেঁধেছে। এ অবস্থায় কর্মী পাঠানোর পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা আনার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, এবার কর্মীদের স্বার্থ অগ্রাধিকার দেওয়ার আশ্বাস দিলেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যয় বাড়ানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এরপর আসে করোনা মহামারির ধাক্কা। তিন বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর, এই দুঃসময়ে কর্মী পাঠাতে গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সই হলো সমঝোতা স্মারক।

কিন্তু এবারও সিন্ডিকেটের শঙ্কা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত ১৪ জানুয়ারি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীকে মালয়েশিয়া সরকারের পাঠানো চিঠিতে মাত্র ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর শর্ত উল্লেখ করা হয়।

এর জবাবে, ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর সুযোগ চাওয়া হয়। এ অবস্থায় আবারও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যক্তিখাতের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।

ইস্টার্ন বে বাংলাদেশের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বাবুল বলেন, ২৫ জনের আন্ডারে তো যাওয়ার দরকার নেই। মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে, আমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে লোক পাঠিয়ে দিব। মালয়েশিয়া যদি চাপ দেই তাহলে ১০ জনের জায়গায় ২৫ জন কিভাবে যাবে, তাহলে সে বিষয়টা সমাধান করা।

অভিবাসী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন শিকদার বলেন, যদি সে রকম সিন্ডিকেট হয় তাহলে দেখবেন ১ বছর লোক যাবে তারপর সেখানে আবার আগের মত বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। মালয়েশিয়ার দিক থেকে এটা কিভাবে সমাধান করবে সেটা যেন বাংলাদেশ সরকারকে পরিষ্কার করে।

সিন্ডিকেটমুক্ত না হলে সরকারের বেঁধে দেয়া খরচে কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে না বলেও জানান তারা।

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন শিকদার আরও বলেন, যখন সিন্ডিকেট হয়ে যায় তখন কিছু মার্কেটে কিছু লোকের আওতায় বিদেশে পাঠানো হয় সে জায়গায়ও কিন্তু মাইগ্রেশন বেড়ে যাবে।

এদিকে, কর্মীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, আমি কিন্তু কোনো সিন্ডিকেট প্রমোট করতেছি না। ওরা সরাসরি নিতে পারে আবার মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেও নিতে পারে। আমি ১ লাখ ৬০ এর ফিগার দেখছি না, এর নিচে দেখছি। নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ের উপরে যদি কেউ যায় তাহলে আমার হাতে যে আইনি ক্ষমতা আছে ওটা আমি প্রয়োগ করব।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্মী পাঠানোর ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে টাকা লেনদেন না করতেও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

তিনি বলেন, কত টাকা দিতে হবে আর কোথায় দিতে হবে সেটা নির্ধারণ করে আপনাদের জানাব।

এসএইচ-০১/২৫/২২ (প্রবাস ডেস্ক)