বগুড়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী!

বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইকবাল হোসেন রিপন নামে এক প্রার্থী। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ইকবাল হোসেন রিপন এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত প্রধান আসামি। তারপরও প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে নির্বাচনী সকল কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের মেয়ে ও বগুড়া সরকারি মজিবর রহমান মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের ওই ছাত্রীকে একই গ্রামের মৃত গোলাম রহমানের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন রিপন দীর্ঘদিন যাবত উত্ত্যাক্ত করে আসছিলেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা ছাড়েননি রিপন। এ অবস্থায় ২০১৮ সালের ৪ জুন রাত ৮টায় ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন রিপনসহ ৭-৮ জন ওই ছাত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় অপহৃত ছাত্রীর বাবা মাসুদ করিম লিটু বাদী হয়ে ওই রাতেই ইকবাল হোসেন রিপনকে প্রধান আসামি করে এজাহারভুক্ত চারজন এবং অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত অপর আসামি জামাল উদ্দিন ও ইউসুফ আলীকে গ্রেফতার করে।

অপহরণের ৯ ঘণ্টা পর ২০১৮ সালের ৫ জুন ভোর ৫টার দিকে ধুনট উপজেলার চিকাশী গ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকনের বাড়ির পাশ থেকে অপহৃত কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন ধুনট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন কুমার কুন্ড মামলাটি তদন্ত শেষে ইকবাল হোসেন রিপনসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলার অন্যান্য আসামি জামিনে মুক্ত রয়েছে। কিন্ত মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন রিপন আজও আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করেননি। তারপরও অপহরণ ঘটনার পর থেকে ইকবাল হোসেন রিপন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এদিক আগামী ১৮ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইকবাল হোসেন রিপন ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া নির্বাচনী শোডাউনসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করছেন। উপজেলার সর্বত্র তার ছবি সম্বলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন রিপন বলেন, সময়ের অভাবে জামিন নিতে পারিনি। নির্বাচন শেষ হলে জামিন নিয়ে নিব।

ধুনট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, ইকবাল হোসেন রিপন একটি অপহরণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এটা ঠিক। তবে সেই মামলায় জামিনে আছে কি-না সেটি আমার জানা নেই। থানার ওয়ারেন্ট আছে কি-না সেটিও আমি জানি না।

ধুনট উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, ইকবাল হোসেন রিপন পলাতক আসামি কি-না সেই তথ্য আমার জানা নেই। বিষয়টি থানা পুলিশ ভালো বলতে পারবে। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হবে।

বিএ-০৪/১৩-০২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)