বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যায় স্বামী ও সতীনের যাবজ্জীবন

যৌতুক না পেয়ে আছিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামী এবং সতীনকে (স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আব্দুর রহিম সোমবার দুপুরে এই রায় দেন।

দণ্ডিতরা হলেন- জেলার গাবতলী উপজেলার রাণীরপাড়া গ্রামের ছেরাপ মণ্ডলের ছেলে সবুজ মণ্ডল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুকছানা বেগম।

বিচারক রায়ে ওই দুজনকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আর ৬ মাস করে কারাদণ্ডেরও আদেশ দেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর আশেকুর রহমান সুজন জানান, দণ্ডিত সবুজ মণ্ডলের সঙ্গে প্রায় কুড়ি বছর আগে একই জেলার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফের কন্যা আছিয়া বেগমের বিয়ে হয়।

তাদের ঘরে দু’টি সন্তান জন্ম নেয়। তবে বিয়ের প্রায় ১১ বছরের মাথায় সবুজ মণ্ডল রুকছানা বেগম নামে অপর এক নারীকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে সবুজ মণ্ডল প্রথম স্ত্রী আছিয়া বেগমকে যৌতুকের জন্য চাপ দেন।

এ নিয়ে গ্রাম্য শালিসেও কোন ফয়সালা না হওয়ায় আছিয়া বেগামের ভাই মোত্তালেব হোসেন যৌতুক হিসেবে ৫ হাজার টাকা তার ভগ্নিপতিকে দেন। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে সবুজ মণ্ডল আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।

দাবি করা সেই টাকা দিতে না পারায় সবুজ মণ্ডল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুকছানা বেগম মিলে ২০১৪ সালের ২ আগস্ট আছিয়া বেগমকে মারপিট ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তার লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।

পরে নিহত আছিয়া বেগমের ভাই মোত্তালেব হোসেন ভগ্নিপতি সবুজ মণ্ডল, তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুকছানা বেগম ও দেবর লাল মণ্ডলসহ ৪জনের বিরুদ্ধে গাবতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পিপি আশেকুর রহমান সুজন জানান, দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সবুজ মণ্ডল আগে থেকেই কারাগারে আটক ছিলেন। তবে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুকছানা বেগম জামিনে ছিলেন। তবে রায় ঘোষণার দিন তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় লাল মণ্ডল ও মোমিন প্রামাণিক নামে পলাতক দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

বিএ-১৩/২১-১০ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)