বিদেশফেরতদের খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হবে

বগুড়ায় বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মাত্র ৪৩ শতাংশকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৫৭ শতাংশেরই কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার সকালে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, যারা নিজেদের আড়াল করে রেখেছেন তাদেরকে যে কোন মূল্যে খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হবে। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে।

জেলা প্রশাসক জানান, গত ১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশ থেকে বগুড়ায় ২ হাজার ২৬৬ জন দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৯৭৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩১৩ জনের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম আলী বেগসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, বিদেশ ফেরত অনেকে পাসপোর্টে বগুড়ার ঠিকানা ব্যবহার করলেও দেশে ফেরার পর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। তবে যারা বাড়ি ফিরেও নিজেদের আড়াল করে রেখেছেন তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হবে। এ সময় তিনি আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সকলকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থানের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আপনার কেউ বাড়ির বাইরে আসবেন না। এরই মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। যারা অযথা বাড়ির বাইরে আসবেন তাদের বিরুদ্ধে জনগণের স্বার্থেই আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অথবা সন্দেহভাজনদের চিকিৎসায় আইসোলেশন ইউনিট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে দু’টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) চালুর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ২৫০ শয্যার ওই হাসপাতালে এরই মধ্যে করোনা আক্রান্তদের জন্য ১৮৯ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে ১৫০ চিকিৎসক ও ৩০০ নার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এর পাশাপাশি বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিটের জন্য ৫জন চিকিৎসক ও ১০জন নার্সকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য সিভিল সার্জনের দপ্তরের ১০জন চিকিৎসক ও ৪জন টেকনিশিয়ানের সম্বন্বয়ে কুইক রেসপন্স টিমকেও সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হওয়া মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কথাও জানান জেলা প্রশাসক।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে ২০০ পরিবার, পৌরসভায় ৫০০ এবং জেলা সদরে এক হাজার পরিবার ধরে জেলায় মোট ২৮ হাজার ১০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৯ হাজার ৯১৬ পরিবারের মাঝে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকাও বিতরণ করা হয়েছে। এসময় তিনি কর্মহীন মানুষের সহায়তায় তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

বিএ-০৯/০২-০৪ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)