ভোটে হারার প্রতিশোধ : প্রার্থীর সমর্থকরা ভাঙ্গলো সাঁকো

নির্বাচনে পরাজিত হয়ে চার গ্রামের একমাত্র পারাপারের মাধ্যম বাঁশের সাঁকো ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের এক মেম্বার প্রার্থীর বিরুদ্ধে।

গ্রামবাসীরা ভোট দেয়নি এমন অভিযোগে শুক্রবার চরবেলগাছী গ্রামে নদীর উপর নির্মিত একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি ভেঙ্গে ফেলা হয়।

এমন ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে।

জানা গেছে, ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে এ উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার পদে আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু (টিউবওয়েল প্রতীক) ও নুরুন্নবী মন্ডল হিটলার (মোরগ প্রতীক) অংশ নেন। এর মধ্যে আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু পরাজিত হন। এতে করে তার কর্মী সমর্থকরা ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

এমনকি ভোট না দেওয়ায় চরকল্যাণী, চরবেলগাছী, চরবিনোদপুর ও বেলগাছী গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলে তারা। এতে করে ওই এলাকার মানুষের যাতায়াত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই উপজেলা সদরে যেতে তাদের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, বাঙালী নদীর ওপর বেলগাছী নামক স্থানে ব্রিজ আছে। এ ব্রিজে যাওয়ার জন্য চরবেলগাছী এলাকায় গ্রামবাসীর চাঁদার টাকায় খালের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। আর এই সাঁকোটি দিয়েই চার গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন।

তারা আরও জানান, ইউপি নির্বাচনে বেলগাছী গ্রামের মেম্বার প্রার্থী আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু হেরে গেছেন। তাকে ভোট না দেওয়ায় তার কর্মী সমর্থকরা যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সাঁকোটি ভেঙে দিয়েছে। রাতের আঁধারে কাজটি করা হয়েছে। এতে করে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সদ্য নির্বাচিত মেম্বার নুরনবী মন্ডল হিটলার বলেন, কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াতের সুবিধার্থে চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন। কিন্তু নির্বাচনী জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে সেটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। যা ভাবতেও অবাক লাগছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরাজিত মেম্বার প্রার্থী আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু। তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি ও আমার কোনো কর্মী সমর্থকরা জড়িত নই। ভোট না দেওয়ার কারণে মানুষের যাতায়াতের সাঁকোটি ভেঙে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এসএইচ-২০/১৩/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)