পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা খাদ্য সঙ্কটে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গায় পদ্মা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মার পাড় থেকে সরে নিরাপদ দুরত্বে আশ্রয় নিচ্ছেন গোয়ালডুবি এলাকার বাসিন্দারা। করোনাকালে এমনিতেই কাজ কর্ম বন্ধ,তা ওপর পদ্মার ভাঙন। সব মিলিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গত ৫ দিনে অন্তত ৫০টি পরিবার বাড়ি ভেঙে নিরাপদ দুরত্বে সরে গেছে। এলাকাতে কারো ঘরে খাবার নাই। সরকারি লোকজন মাসে একদিন এসেছিল, ১০ জনকে ৮ কেজি করে চাউল দিয়ে ছবি তুলে গেছে। আর তাদের দেখা মেলেনি।

গোয়ালডুবি এলাকার শ্রী চন্দন কর্মকার বলেন, টাকা লোন নিয়ে বাড়িটা করেছিলাম। গত ৫ দিন আগে বাড়ি মালামাল নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়েছি। গত পরশু বাড়ির ভিটামাটি টুকু নদীতে নেমে গেছে। লোন শোধ করতে পারিনি, এর মধ্যে আবার নদীতে ভাঙন ধরেছে। ভাঙনের কারণে বাড়িটাও ভাঙতে হয়েছে। গত পরশু থেকে যে দুটা ভাত খাবো, সে ব্যবস্থাটুকু নেই। কোন কাজ কর্ম করবো, সে জায়গাটাও নাই। গত পরশু দিন থেকে একইভাবে আছি।

একই এলাকার বাসিন্দা শ্রীমতি ববিতা বলেন, সরকার থেকে কিছুই পাইনি। স্বামী অসুস্থ থাকায়, কোন কাজ কাম করতে পারেনা। এক বেলা খেতে পাইলে আরেক বেলা কী খাবো, এটা চিন্তা করতে হয়। শেষবার এলাকার একজন আমার অসহায় জীবন যাপন দেখে আমাকে ২০ কেজি চাউল দিয়েছিল সেটিই দিয়ে চলছে। এ চাউল শেষ হয়ে গেলে কি খাবো ভেবে কুল পাইনা।

গোয়ালডুবি এলাকার গ্রামপুলিশ শ্রী বিশু কর্মকার বলেন, গোয়ালডুবিতে আগে দেড়শ পরিবারের বসবাস ছিল। নদী ভাঙনের কারণে প্রায় অনেক পরিবার এলাকা থেকে বাড়ি সারিয়ে নিয়ে চলে গেছে। বর্তমানে ৩০-৩৫ পরিবার এখানে আছে। তারাও বাড়ি এ এলাকা থেকে সরিয়ে নিবে, তাই মালামাল গোচ্ছাচ্ছে।

তিনি বলেন, করোনাকালে এলাকার লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। জমিতে ধান আবাদ করে যে খাবে সে সুযোগ তো আর নাই, কারণ সব জমিতে পদ্মায় নেমে গেছে। এলাকার লোকজন খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন শাখার সহকারি কমিশনার চন্দন কর জানান, বন্যা ও ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য ১৮০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। তাদের মাঝে ত্রাণ ও নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে।

এসএইচ-২২/১০/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)