পরিবার গড়তে চাই শাশুড়ি-বৌয়ের মধ্যে বিশ্বাস-আস্থা

আপনি খেয়াল করে দেখবেন যে যখন বাড়ির বউ সন্তান প্রসব করার সময় হয় তখন বাপের বাড়ি থেকে জোর শুরু হয়  মেয়ের সন্তান তাদের বাড়িতেই হবে বা তাদের এলাকায় হাসপাতালে। এক্ষেত্রে শশুর বাড়ি জনগন তেমন কিছু বলেন না বা বাধা দেন না। সামাজিক রীতি মেনে এক প্রকার মৌন সম্মতি দেখান।

একই অবস্থা সেই শশুর বাড়ির কোন মেয়ে যখন অন্য কারো বাড়িতে বিয়ে হয় এবং সেই মেয়ে যখন সন্তান সম্ভবা হয় তখন মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাচ্চা হবার ৬ মাস পর আবার শশুর বাড়ি পাঠিয়ে দেন । এই রীতিনীতি যে এখনকার তা কিন্তু না । আদি কাল থেকেই এ নিয়ম গ্রাম গঞ্জে শহরে চলে আসছে ।

আমি আমার এলাকায় এমন ও দেখেছি একই সময় একই বাড়িতে ছেলের বউকে বাচ্চা ডেলিভারিরি জন্য তার বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আবার সেই একই সময় সেই বাড়ির মেয়েকে ডেলিভারিরি জন্য নিয়ে এসেছেন ।

এখন আমার কথা হল শাশুড়ি কি তার ছেলের বউ এর কাছে ভরসার মানুষ হতে পারছে না। নাকি ছেলের বউ এমন কঠিন সময়ে তার মা কে ছাড়া অন্য কাউকে ভরসা করতে পারেন না ।

যেই মানুষটি শাশুড়ি চরিত্রে ছেলের বউ এর কাছে ভরসার স্থান হতে পারল না, সেই একই মানুষ মা এর চরিত্রে নিজের মেয়ের কাছে ভরসার স্থান হয়ে ঠিকই উঠছেন। ব্যাপারটা আরো একটু ঘুরিয়ে বলি ।

বউয়ের বেলায়, মা তুমি তোমার মায়ের বাড়িতে গিয়ে ডেলিভারি হয়ে আসো , আমি এত ঝামেলা নিতে পারবনা?

আবার নিজের মেয়ের বেলায়ঃ ওকে শশুর বাড়িতে থাকতে হবে না , ওদের কোন বিশ্বাস নেই , তোর যত্ন নিবে কিনা , তার চেয়ে আমার মেয়ে আমার কাছেই ডেলিভারি হবে।

তার মানে কি দাঁড়ালো , এখানে মানূষের সমস্যা, নাকি ভরসার সমস্যা ।

মানুষ তো একজনই, মা হয়ে মেয়েকে শশুর বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসছেন। কিন্তু শাশুড়ি হয়ে আবার বউকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন , বা বউ নিজেও ভরসা না পাবার জন্য বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছে।

তবে এর ব্যতিক্রম কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক আছে । যেখানে শশুর শাশুড়িই সব । যে ব্যাটার বউ এর কাছে শশুর শাশুড়ি সব।,সে সকল সশুর শাশুড়ি বউ এর কাছে বিশ্বাস বা ভরসার ব্যপারটা ভালোবাসা দিয়ে নিশ্চিত কর‍তে পেরেছেন ।

আমি বিশ্বাস করি ভালোবাসা, আস্থা , সম্মান ও ত্যাগ ছাড়া এই প্রথাগত দুরত্বের সমস্যা সমাধান হবার নয় ।
আজ এই নারী দিবসে সেই সকল ব্যাটার বউ ,শাশুড়ি , মেয়ে ও মায়ের প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা রইল । সবার মনেই ভালোবাসার উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাক আজ থেকেই ।

এসএইচ-৩১/১৪/২২ (হাসান তানভীর, কুয়ালালামপুর)