ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান প্রতিযোগিতা সবসময়ই উত্তেজনা ছড়িয়ে আসছে। ক্রিকেটীয় কারণের পাশাপাশি দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতাও এক্ষেত্রে রেখেছে ভূমিকা। আরও একবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল, তাও বিশ্বকাপের মঞ্চে। শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শুরু হবে দুই দলের লড়াই।
অতীত ইতিহাস ছাড়াও এবারের টুর্নামেন্টের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলেও ম্যাচটি উত্তেজনাকর হতে যাচ্ছে। কারণ, দুই দলই নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে। ভারত তাদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর আফগানিস্তানকে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছে। অন্যদিকে, নেদারল্যান্ডসকে প্রথম ম্যাচে হারানো পাকিস্তান দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতেছে।
তবে একটি দিকে ভারতকে এগিয়ে রাখতেই হবে। তাদের সেরা সব খেলোয়াড় রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি কিংবা জাসপ্রিত বুমরাহ; সবাই ফর্মে আছেন। কিন্তু পাকিস্তানের মূল কয়েকজন খেলোয়াড় বাবর আজম, শাদাব খান ও শাহীন আফ্রিদিরা এখনো নিজেদের খুঁজছেন।
গত কয়েক বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে বেশ কয়েকবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই দলের মধ্যে সামগ্রিক মুখোমুখি লড়াইয়ের চিত্রও একবার দেখে আসা যাক।
ভারত ও পাকিস্তান প্রথম মুখোমুখি হয় ১৯৫২ সালে, দিল্লিতে একটি টেস্ট ম্যাচে। এর পর থেকে মোট ২০৪ বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লড়াই করেছে দুই দল। এর মধ্যে পাকিস্তান ৮৮ ম্যাচ ও ভারত জিতেছে ৭৩ ম্যাচ।
ওয়ানডে ক্রিকেটেও এগিয়ে পাকিস্তান। তবে সর্বশেষ এক যুগে ভারতের পারফরম্যান্সই বেশি উজ্জ্বল। ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত দুই দল ম্যাচ খেলেছে ১৪টি, যার মধ্যে ভারতের জয় ১০টিতে। দুই দল ওয়ানডেতে ১৩৪ বার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে পাকিস্তানের জয় ৭৩টি আর ভারতের ৫৬টি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই দেশ মোট ১৭টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে। যার মধ্যে পাকিস্তানই জিতেছে ১১ বার, ভারতের জয় মাত্র ৫ বার। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য এগিয়ে ভারত। দুই দলের খেলা ১২ ম্যাচের মধ্যে ৯টিতে তাদের জয়। এর মধ্যে ২০০৭ সালের উদ্বোধনী বিশ্বকাপের ফাইনালও রয়েছে। দুই দলের খেলা ৫৮ টেস্ট ম্যাচে ড্র হয়েছে ৩৮টিতেই। এছাড়া পাকিস্তান জয় পেয়েছে ১১ ম্যাচে, ভারত ৯ ম্যাচে। ৪টি করে টেস্ট সিরিজ জিতেছে দুই দলই, ড্র হয়েছে ৭টি সিরিজ। তবে আইসিসি টুর্নামেন্টের প্রসঙ্গ আসলেই যোজন যোজন এগিয়ে থাকবে ভারত। ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে কখনো হারেনি ভারত, ৭ ম্যাচের সবকটিতেই জয়। ২০২১ সাল পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চিত্রও একই ছিল। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে সেই ঐতিহাসিক ১০ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। বর্তমানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৬-১ ব্যবধানে এগিয়ে ভারত। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আবার পাকিস্তান এগিয়ে, ৫ ম্যাচের মধ্যে তাদের জয় ৩টিতে। ওয়ানডেতে একে অন্যের বিপক্ষে রান সংগ্রহে দুই দলের মধ্যে সবার ওপরে শচীন টেন্ডুলকার। ৬৭ ইনিংসে ক্রিকেট ঈশ্বরের রান ২ হাজার ৫২৬। ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক। ৬৪ ইনিংসে তার রান ২ হাজার ৪০৩। উইকেটের দিকে দিয়ে সবার ওপরে ওয়াসিম আকরাম। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে আকরামের উইকেট ৬০টি। দুইয়ে থাকা ভারতের অনিল কুম্বলের উইকেট ৫৪টি।
টেস্টে দুই দলের লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি রান পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদের (২ হাজার ২২৮)। ভারতের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান সুনীল গাভাস্কারের (২ হাজার ৮৯)। উইকেটের দিক দিয়ে সবার ওপরে কপিল দেব (২৯),পাকিস্তানের হয়ে সবার ওপরে ইমরান খান (২৩)।
টি-টোয়েন্টিতে ৪৮৮ রান নিয়ে দুই দলের লড়াইয়ে সবচেয়ে এগিয়ে ভারতের বিরাট কোহলি। পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান মোহাম্মদ রিজওয়ানের (১৯৭)।
এসএইচ-০২/১৪/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)