ঠিক আগের ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছয় নম্বরে নেমে দারুণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেখানে পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পাবেন বলেই ভেবেছিলেন সবাই। সেখানে উল্টো মাহমুদউল্লাহ নামলেন সাত নম্বরে!
বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং লাইন আপ এবার অবাক করেছে সবাইকেই। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নামতে হয়নি তাকে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট নম্বরে নেমে খেলেন হার না মানা ৪১ রানের ইনিংস। পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রোমোশন পেয়ে নামেন সাত নম্বরে। এবার করেন ৪৬ রান। এরপরের ম্যাচে তো আরও এক দফা প্রোমোশন পেয়ে করেন সেঞ্চুরিই।
সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেও কিংবা দলের দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতেও ডাচদের বিপক্ষে পাঁচ নম্বরে কিংবা তারও আগের নামাটাই স্বাভাবিক ছিল মাহমুদউল্লাহর জন্য। কিন্তু তা হয়নি। আবারও পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাকে। এবার সফল হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৪১ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন বাস ডি লিডির শিকার হয়ে।
যার ফলাফল, আইসিসির সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডসের কাছে ৮৭ রানের বড় হার মানতে হয়েছে বাংলাদেশকে। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে এতো বড় জয় আর কখনোই পায়নি ডাচরা। আরও একবার ব্যাটিংদের এমন ব্যর্থতার পর রীতিমতো করজোড়ে মাহমুদউল্লাহকে আরও উপরের দিকে নামানোর আকুতি জানিয়েছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম।
পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল ‘এ স্পোর্টসে’র শো দ্য প্যাভিলিয়নের আলোচনায় আকরাম বলেন, ‘বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য আমার খারাপ লাগে। দয়া করে মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলাও। আপনার মিডল অর্ডার যখন ব্যর্থ হচ্ছে, তখন প্রধান ব্যাটসম্যানকে চারে কিংবা পাঁচে খেলান। জানি না টিম ম্যানেজমেন্ট কী ভাবছে। কেন মাহমুদউল্লাহ সাত নম্বরে, আশা করি, কেউ এর কারণটা আমাকে ব্যাখ্যা করবে। যদি তিন উইকেট চলে যায়, মাহমুদউল্লাহকে পাঠাও, এক প্রান্ত আটকে দেবে।’
সেই কারণটা সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হয়েছিল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে। নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের দলটা এমন, অনেকের সীমাবদ্ধতা আছে। ব্যাটিং বলেন, বোলিং বলেন। বিভিন্ন সময়ে বোলিং করতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না, বিভিন্ন পজিশনে ব্যাট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। বিভিন্ন বোলারকে ফেস করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আমাদের অনেক কিছু মানিয়ে নিয়ে চলতে হয়।’
‘আমি অন্তত চাই, সবাই যার যার জায়গায় যাবে এবং পারফর্ম করবে। পারফর্ম করলে এসব বিষয় সামনে আসতো না। যদি উপরের দিকে ভালো ব্যাটিং করতে পারতাম, নিচে রিয়াদ ভাই, মুশফিক ভাইর যে রোল চিন্তা করে এসেছিলাম, পারফেক্ট হতো, রিয়াদ ভাই যে ফর্মে আছে,’ যোগ করেন সাকিব।
তবে মাহমুদউল্লাহ উপরে আসলে নিজেদের ব্যাটিং যে ভালো হতো তা স্বীকার করে নিয়েছেন অধিনায়ক, ‘তবে আমি সম্মতি জানাই, রিয়াদ ভাই যেভাবে ব্যাট করছে, উনি উপরের দিকে আসলে দলের জন্য ভালো হতো। আসলে রিয়াদ ভাইকে বাদ দিলে মুশফিক ভাই ভালো করেছে, বাকিরা আমরা সবাই হতাশাজনক।’
এসএইচ-১২/২৯/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)