২০০৩ বিশ্বকাপ থেকে একই চিত্র পাকিস্তানের
আরও একটি হতাশামাখা বিশ্বকাপ শেষে ভাঙা-গড়ার মিশনে নেমেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। চলতি আসরের ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিন ফরম্যাট থেকেই দলের অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন বাবর আজম। এর আগে বিশ্বকাপ জেতার প্রতি প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভারতে পা রাখলেও, সেমিফাইনালেই ওঠা হয়নি পাকিস্তানের। সাধারণত বাজে হারের পর যেকোনো দলেই আগা-গোড়া পরিবর্তন আনা হয়। সেটি পাকিস্তান ক্রিকেটে আরও বেশি দেখা যায়। যা ঘটে আসছে ২০০৩ বিশ্বকাপ আসরের পর থেকে।
এবারের আসরের শুরুটা দুই জয় দিয়ে করলেও এরপর টানা ৪ হারে চাপে পড়ে যায় বাবরের দল। যেখানে অনভিজ্ঞ আফগানিস্তানের কাছে হারা থেকে শুরু করে পাকিস্তান জেতা ম্যাচও হেরে যায়। ভারতের বিরুদ্ধে পরাজয়ের পর, সাবেক পাক তারকাদের কাছেও চরম কটাক্ষের শিকার হতে হয় গোটা দলকে। এমনকি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও হারের বৃত্তে আটকে থাকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান বাজেভাবে পরাজিত হয়। এমন শোচনীয় অবস্থার পর বাবরের পদত্যাগ মিলিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক তারকা রশিদ লতিফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) তিনি পাকিস্তানের অধিনায়ক এবং তাদের বরখাস্ত কিংবা পদত্যাগের সাল তুলে ধরেন।
এবার পাকিস্তান গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। দলের অনাকাঙ্ক্ষিত এই ফলাফলের পরই দেশে ফিরে গিয়ে পাকিস্তান দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বাবর আজম। পরিস্থিতি যে বেশ জটিলের পথে এগোচ্ছে, তা তিনি বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারেন। সেজন্যই আগেভাগে নিজের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বাবর। অবশ্য এর আগেই দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল— বাবর নিজ থেকে সরে না গেলে তার নেতৃত্বভার কেড়ে নেওয়া হতে পারে।
এরপরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এক বার্তায় বাবর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি—তিন সংস্করণ থেকেই পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বাবর। এমন ঘোষণার আগে ২৯ বছর বয়সী এই তারকা পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফের সঙ্গে দেখা করেন। নেতৃত্ব ছাড়লেও তিন সংস্করণেই খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের পর তাই নতুন অধিনায়কের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। এরপর নতুন অধিনায়ক বেছে নিতে পাকিস্তান সময় নেয় মোটে ৯৩ মিনিট। যেন আগে থেকেই এই ঘোষণার জন্য প্রস্তুত ছিল তারা। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের টি-টোয়েন্টিতে নতুন অধিনায়ক হলেন পেসার শাহিন আফ্রিদি। আর সাদা পোশাকের টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক শান মাসুদ।
এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের ফল আশানুরূপ ছিল না। সেবারও গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়ে হয় তাদের। দেশে ফেরার পরই অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সরফরাজ আহমেদকে। এখানেই শেষ নয়, ২০১৫ বিশ্বকাপে অবশ্য পাকিস্তান কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় তারা। তারপরই অধিনায়কের পদ থেকে সরে যান মিসবাহ-উল-হক। ২০১১ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠলেও পাকিস্তান হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে। সেবার অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শহীদ আফ্রিদিকে। এর আগে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পরই ক্রিকেট থেকেই অবসর নিয়ে নেন ইনজামাম-উল-হক। ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারত বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলেও পাকিস্তান সুপার সিক্সে জায়গা করতে পারেনি। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতেই তারকা পেসার ওয়াকার ইউনিসকে বরখাস্ত করা হয়।
এসএইচ-১৩/১৬/২৩ (স্পোর্টস ডেস্ক)