ভাড়ায় মেলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি!

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দরে মোবারক হোসেন গভীর রাত পর্যন্ত রিকশা চালান সৈয়দপুর শহরে। এ কারণে প্রতিদিন বাড়ি যেতে খুবই সমস্যা হতো তার। তাই তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েসহ সেখানেই বসবাস করছেন।

এভাবে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আরও অনেকে বসবাস করছেন। এ চিত্র নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালে উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে ভূমিহীন ও দুস্থদের জন্য নির্মাণ করা হয় ১০৯টি আধাপাকা ও টিনসেড বাড়ি। এরপর বাড়িগুলো একই ইউনিয়নের ভূমিহীন ও দুস্থদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়। অনেকেই বরাদ্দ পাওয়ার পর বাড়িতে আর বসবাস করেননি।

এর মধ্যে নাসিমা বেগম (বাসা নং- ১/৫), মো. বাবু (বাসা নং ৮/৩), বুলবুল (বাসা নং ১৫/২), আব্বাছ আলী (বাসা নং ১১/০১), ছকিনা বেগম (বাসা নং ১১/৪), মো. আছিউল (বাসা নং ৬), মো. হাকিম (বাসা নং ৭), সেকেন্দার আলী (বাসা নং ১৯) এবং মঞ্জুআরা (বাসা নং ২৩) বরাদ্দ নিয়ে বাড়িগুলো অন্যকে ভাড়ায় দিয়েছেন। আর যারা বিক্রি করেছেন তারা হলেন- নূর ইসলাম (বাসা নং ৭/৩), মোছা. আকলিমা (বাসা নং ১২/০৫), জাহিদুল ইসলাম (বাসা নং ৩/৫) এবং মো. খলিল (বাসা নং ৯/২)।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ণের ২১ নম্বর বাড়িটি বরাদ্দ পেয়েছিলেন বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হোসনে আরা ওরফে ঢেপো নামে পঞ্চাশোর্ধ এক নারী। তার নিজস্ব জমি ও বসতবাড়ি থাকায় এ বরাদ্দ পাওয়া আশ্রয়ণের প্রকল্পের বাড়িটিতে তিনি কখনো থাকেননি।

বরাদ্দের দিন থেকেই এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় বাড়ির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং সেখানে এখন নির্বিঘ্নে বসবাস করছে কুকুর-শেয়াল।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম হুসাইন বলেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ নিয়ে নিজে না থাকা অথবা ভাড়া ও বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এমন কাজ কেউ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএইচ-২৭/০৭/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক, সূত্র : সময়)