মিশরী তরুণী এখন দিনাজপুরের গৃহবধূ

ভাষা-সংস্কৃতির ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশিকে বিয়ে করে সুদূর মিশর থেকে বাংলাদেশে এসেছেন মিশরীয় তরুণী নুরহান। ২০ বছর বয়সী সংসার শুরু করেছেন স্বামী শমসেরের সঙ্গে।

শমেসেরের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের অর্জুনাহারে। এদিকে বিদেশি বধূকে দেখতে আশপাশের এলাকার মানুষের পদচারণায় মুখরিত শমসেরের বাড়ি।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর শতগ্রাম ইউনিয়নের অর্জনুহার গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়ার ছেলে সমশের ২০০৮ সালে কাজের খোঁজে মিশরে যান। দীর্ঘদিন কাজের পরে নিজেই মিশরের কায়রো শহরে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন।

এদিকে মিশরীয় নারী নুরহানের ২০১৮ সালে পরিচয় হয় বাংলাদেশি সমশেরের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে উঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। পরে এ বন্ধুত্ব থেকেই প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর পারিবারিকভাবে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের ৪ বছর পর গত ১০ জুলাই নুরহান তার স্বামীর বাড়ি বাংলাদেশে এসেছেন। মিশরীয় বধূকে দেখে খুশী আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধব।

ভিনদেশিদের ভালোবাসার টানে নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আসার ঘটনা অহরহ ঘটলেও ভিনদেশি ছেলেকে বিয়ে করে নিজ দেশ ছেড়ে একটি অপরিচিত দেশে সংসার গড়ে তোলার ঘটনা বিরল। কিন্তু শমসেরকে বিয়ে করে নুরহান এখন পুরোদস্তুর একজন বাঙালি বধূ।

স্বামী শমসের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি অর্জুনাহার গ্রামে বসবাস শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে শমসের ও নুরহানের কোল জুড়ে একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে এসেছে। বড় মেয়ের বয়স ৩ বছর। নাম রাখা হয়েছে রুকাইয়া এবং ছেলে মো. ইয়াসিন বয়স ১১ মাস। এদিকে নাতি-নাতনীসহ মিশরীয় বৌমাকে পেয়ে সমশেরের বাবা-মা খুশি।

নুরহান জানান, পরিবারের মতামত নিয়ে তিনি এদেশে এসেছেন। ইচ্ছে এখানে থেকে স্বামীর সংসার করবেন। কারণ এ দেশটা খুব পছন্দের নুরহানের।

নুরহানের স্বামী শমসের জানান, ৪ বছর পূর্বে তাদের প্রথম পরিচয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। টানা ২মাসের বোঝাপড়ার একপর্যায়ে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছেন তারা। দুজনের কৃষ্টি-কালচার ভিন্ন হলেও এখনও পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি। দুইজনেরই ইচ্ছা বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার। তবে পিরামিডের দেশ মিশরের কায়রো শহরে নিজস্ব গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন বলে তিনি জানান।

এসএইচ-১৮/০৮/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)