পরীমনি কারাগারে: বাংলাদেশে আর কোন ইস্যু নাই!

পরীমনি

জি. এম. মুরতুজা: পরীমনি কারাগারে: বাংলাদেশে আর কোন ইস্যু নাই! পর পর দুই দফা রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার পরীমনিকে অবশেষে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পরীমনির বাসায় পাওয়া মাদকের মূল্য দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার টাকা! এতবড় অপরাধীর বাড়ী থেকে মাত্র দুই লাখ টাকার মদসহ অন্যান্য মাদক পাওয়ায় তাকে দুই দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। একে বলে লঘু অপরাধের গুরু দন্ড।

চমৎকার! বর্তমানে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে, ফেসবুকে, ইউটিউবে আর মানুষের ভাব-ভাষ্য-মতামত দেখে মনে হচ্ছে পরীমনি ছাড়া দেশে আর কোনো ইস্যু নাই, আলোচনার কোন বিষয় নাই। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অসাধারন সাফল্য নাই। করোনা মহামারী নাই, তাতে মানুষের আক্রান্ত নাই, মৃত্যু নাই, ভ্যাকসিনের সংকট নাই।

দেশের সকল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা চমৎকার। দেশে কেউই ঘুষ খান না। দূর্নীতিও করেন না। টেন্ডারবাজী নাই। শিক্ষা বাণিজ্য নাই। অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য নাই। ভূমি দখল নাই। বন্যা নাই। নদী ভাঙ্গন নাই। বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে নাই। খাদ্যের মূল্য স্বাভাবিক। মানুষের ঘরে ঘরে অফুরন্ত খাবার। শেয়ার বাজার রমরমা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে আলোর ঝলকানি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোন হাতশা নাই, সন্তানদের নিয়ে পিতা-মাতার কোন উদ্বেগ উৎকন্ঠা নাই। বেকার সমস্যা নাই। নারী নির্যাতন নাই। বাল্যবিবাহ নাই। কারো কোন অভাব অভিযোগ নাই। সবাই পরম শান্তিতে আছেন! সুখের সাগরে সবাই হাবুড়ুবু খাচ্ছেন!

তাই আপাতত এসব নিয়ে কোনো আলোচনা সমালোচনার দরকার নাই। কাজেই পরীমনি মহাপাপ করেছেন। মারাত্মক অপরাধ করে দেশের পুরুষজাতের চরিত্র নষ্ট করে ফেলেছেন। সে মদ্যক, দূর্ধষ ক্রিমিনাল, মাফিয়া চক্রের নেত্রী, মাদক জগতের রানী।

দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনকে ধ্বংস করে ফেলছেন- তাই সবাই পরীমনি’র ফাঁসি দাবি করেন। তাকে শূলে চড়ান। তাহলে ষোলকলা পূর্ণ হবে। সবার চাওয়া পূর্ণ হবে! সবাই শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন! তাই তো? বারে বা! আমাদের সভ্য দেশের সভ্য মানুষগণ! আমাদের মানসিকতা ও মনুষত্ব কোন পর্যায়ে নেমেছে? ফুরসত পেলে একটু চিন্তা কইরেন?