বিদেশ ভ্রমনের টুকরো স্মৃতি পর্ব-২

স্মৃতি

জি. এম. মুরতুজা: Anoushey Ashraf একজন পাকিস্তানী অভিনেত্রী এবং কালচারাল এ্যাকটিভিষ্ট। তার সাথে আমার পরিচয় হয় লন্ডনে। তিনি পাকিস্তানী প্রতিনিধি দলের সাথে লন্ডনে এসেছিলেন Women of the World- WoW Festival-এ অংশ নিতে। ফেস্টিভেল শুরুর আগের দিন আমরা যখন ফেস্টিভেল ভেন্যু সাউথব্যাংক সেন্টার পরিদর্শন করছিলাম তখন তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়।

আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে তিনি আমাদের ক্রিকেটের উন্নতি থেকে শুরু করে অনেক কিছু জানতে চান। আমিও সানন্দে তাকে বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি ও অগ্রযাত্রা সম্পর্কে বর্ণনা করি। এরপর ফেষ্টিভেলের প্রায় প্রতিদিনই তার সাথে আলাপচারিতা হয়েছে। আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশ সম্পর্কে পাকিস্তানী সাধারণ মানুষের বর্তমান ধারণা কি?

তিনি চমৎকারভাবে বলেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটদল যখন অন্যকোন দেশের সাথে ম্যাচ খেলে তখন তাদের বেশীরভাগ মানুষ বাংলাদেশ দলকে সমর্থন করেন। বিশেষ করে তরুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে বেশ সমীহের চোখে দেখে। এটা জেনে আমি একটু অবাক হয়েছিলাম!

Anoushey Ashraf-এর কাছে আমার আরেকটি বিষয় জানার ছিল, পাকিস্তানী নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে। তিনি বেশ আগ্রহ নিয়ে বলেন, পাকিস্তানী নারীরা নিজেদের স্বাধীনতা সম্পর্কে এখন বেশ সচেতন।

বিশেষ করে নতুন প্রজম্মের নারীরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, মিডিয়া, স্বাস্হ্য এবং ব্যবসা সেক্টরে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। তারা এখন বেশ আধুনিকমনস্ক। পোশাক থেকে শুরু করে চালচলনে নারীরা এখন অনেক আধুনিক হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানে এখন ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশী আগ্রহী।

বিশেষ করে মেয়েরা এখন উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষা গ্রহণে অনেক বেশী মনোযোগী। বেশীরভাগ মেয়ে ইউকে, কানাডা, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পড়ালেখা করে স্থায়ীভাবে বসবাসে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

এর কারন সম্পর্কে তিনি বলেন, পাকিস্তানে কয়েকটি উগ্র ইসলামপন্থী দল নারীদের স্বাধীনতার বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখে না। ফলে নতুন প্রজম্মের নারীরা ভবিষ্যতের আবাসস্থল হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশকে বেঁছে নিচ্ছে। Anoushey Ashraf নিজেও ইংল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা করছেন বলে জানান।

শিক্ষার হার বাড়ার কারণে নারীরা এখন সরকারী, বেসরকারী, কর্পোরেট ও মাল্টিন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানে বেশ দাপটের সাথে কাজ করছেন। তিনি আমাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, আমি সেখানে গেলে বুঝতে পারবো, তার দেশ এখন কতটা আধুনিক হয়ে উঠা শুরু করেছে। নতুন প্রজম্মের পাকিস্তানীদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি নেই বললেই চলে।

Happy Memories at London, UK in 2020