নারীর স্বাধীনতার জন্য মাপকাঠী নিজেই

সিন্ড্রেলা নিজের জন্য সময় চেয়েছিল, শুধুমাত্র নিজের জন্য। এখনও আমরা মনে করি নারীর অবলম্বন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, ভাল থাকার মূলমন্ত্র একমাত্রার যোগসূত্র। নারীর জন্য স্বাধীনতার মাপকাঠী সে নিজেই হতে পারে। লাগেনা অন্যের সহায়তা। নারী সবসময় পরিপূর্ণ।

ছোট থেকেই কন্যা শিশু শুনে শুনে বড় হয়, ভালো মেয়ে হতে হবে। ভাল মেয়ের সংজ্ঞা কি, সেটা বলা হয়না। আসলে এটা একটা ট্যাগ মার্ক। নারী কে চুপ থাকার মন্ত্র। মানুষের সহজাত আচরণ থেকে “ ভালো মেয়ের” তকমার লোভ দেখানো।

এখনো নারীর অধিকারের কথা বলা হয়, নারী তো তার অধিকার নিয়েই জন্ম গ্রহণ করে। নারী পুরুষ সমান। তার মানে নারী, পুরুষের মত হতে চায় না। সে তার মতই থাকতে চায়।

আমরা যুগ যুগ ধরে যেমন দেখে আসছি তেমনটাই দেখতে চাই। নিয়ম থেকে বের হওয়া মানেই অপরাধ। জোর গলায় কিছু বলার কথা আসলেই নারীর গলায় চিৎকার শোনায়। তার ইচ্ছার কথা শোনায় না। এখনো আমরা শুনি, বিয়ের পর অনেক পুরুষ নারীর ইচ্ছা মত কাজ বা কথা বলার পথে বাধা হয়ে দাড়ায়।

বছরের ৩৬৫দিনের মধ্যে আলাদা করে নারীদের জন্যই শুধু একটা দিন। ৮মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। অথচ ৩৬৫ দিনই নারী দিবস হওয়া দরকার।

প্রথম ১৯০৯সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ওই বছর ২৮ফেব্রুয়ারি প্রথম আমেরিকায় নারী দিবস উদযাপন করা হয়েছিল। সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউইয়র্কে ১৯০৮সালে বস্ত্র শ্রমিকরা তাঁদের কাজের সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ আর সমমানের বেতনের দাবিতে চলে বনধ।

১৯১০সালে কোপেন হেগেনের উদ্যোগের পর ১৯মার্চ অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস চিহ্নিত হয়েছিল। নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যেও অবসানের জন্য প্রতিবাদ করেন লক্ষ মানুষ। একই সঙ্গে রাশিয়ান মহিলারাও প্রথমবার ২৮ফেব্রুয়ারি ‘রুটি ও শান্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে। ইউরোপের নারীরা ৮মার্চ শান্তি বিষয়ক কার্যক্রমকে সমর্থন করে বিশাল মিছিলে নামেন। ১৯১৩-১৯১৪ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও প্রতিবাদ জানানোর একটি প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে। বিশ্বজুড়ে বৈষম্য দুর করার লক্ষ্যে বিশেষ দিনটি পালন করা হয়।

শত বছর পেরিয়ে আজ আমরা নারী দিবস পালন করি। বিশ্বব্যাপী নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাঁদের কাজের প্রশংসা এবং তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়। এই দিনে নারীদের নানা উপহার দেয়া হয়।

নারী দশহাতে কাজ করে এমন একটা ছবি ভীষণ ভাবে ভাইরাল হয়েছিল। আসলেই নারীরা নানা ভাবে কাজ করে ঘরে বাহিরে দক্ষতার পরিচয় দেয়। সাহসী হয়ে মা হয়ে সন্তান লালন পালনে, সেই সাথে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখে। নারীর অহংকার নারী নিজেই।

এসএইচ-০২/০৮/২২ (শাহানা পারভিন, স্টেশন ম্যানেজার, রেডিও পদ্মা)