বিবিসি বাংলা রেডিও বন্ধ করা হচ্ছে কেন?

জি. এম. মুরতুজা: এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোতেও স্থানীয় রেডিও স্টেশন দিনকে দিন যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঠিক তখন আন্তজার্তিক রেডিও স্টেশনগুলো তাদের বিভিন্ন ভাষায় প্রচারিত সার্ভিস বন্ধ করে দিচ্ছে। বাংলাসহ আরো বেশ কয়েকটি ভাষার অনুষ্ঠান প্রচার প্রথমে বন্ধ করে দেয় জার্মানের ডয়চেভেলে। এরপর গত বছরে ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া) বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ করে দেয়। ঠিক একই পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে বিবিসি। দীর্ঘ ৮১ বছর ধরে চলা বিবিসি’র জনপ্রিয় বাংলা অনুষ্ঠান প্রচারও খুব শিঘ্রই বন্ধ করে দেয়া হবে।

তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ডয়চেভেলে, ভোয়া ও বিবিসি বেতার তরঙ্গে তাদের বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ করে দিলেও অনলাইনে মানে নেটমাধ্যমে তারা টেক্সট ও অডিও-ভিজ্যুয়াল কন্টেন প্রকাশ ও প্রচার অব্যাহত রেখেছে ও রাখবে। এতে হয়তো বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা স্বাধীন ও বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পেতে থাকবে। কিন্তু গ্রাম ও শহরের অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে না এমন কোটি কোটি মানুষ স্বাধীন ও বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে থাকবেন।

এরফলে এই বিশাল সংখ্যক মানুষ এখন দেশের দলকানা মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হবে। এটা আমাদের মতো আরো অনেক দেশ ও তাদের জনগনের জন্য বিশাল ক্ষতি হয়ে গেলো। কেননা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এবং আমজনতাকে সঠিক ও বস্তনিষ্ঠ সংবাদ জানাতে এই তিনটি রেডিও স্টেশনের বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষায় প্রচারিত অনুষ্ঠানের ভূমিকা ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও সামাজিক আন্দোলন সংগ্রামকে সফল করতে ভোয়া ও বিবিসি’র বাংলা অনুষ্ঠানের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্ববহ। ভোয়া ও বিবিসি’র বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় ধরণের অন্তরায় সৃষ্টি হবে, এটা নির্দ্ধিধায় বলা যায়॥