স্নাতকে প্রথম হওয়া শাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সোমবার বিকেলে সিলেট নগরীর পশ্চিম কাজল শাহ এলাকার একটি বাসা থেকে প্রতীকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই আকবর হোসাইন ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূইয়া সমকালকে বলেন, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে সিলেট নগরীর পশ্চিম কাজল শাহ এলাকার ১১৭ নম্বর বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রতীককে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে যান। এ ঘটনায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এসআই আকবর হোসাইন ভূইয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। আমাদের ধারণা, রোববার মধ্যরাত বা শেষ রাতে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

এদিকে প্রতীকের আত্মহত্যার জন্য জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা।

ফেসবুকে শান্তা তাওহিদা লিখেছেন, ‘আমার কলিজার টুকরা আমার আদরের একমাত্র ভাই আমার প্রতীক আর নাই। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগকে আমি ছাড়ব না। অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানায়ে মাস্টার্সে সুপারভাইজার দেয় নাই। বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে। আমার ভাইটা টিচার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল এটাই তার অপরাধ…। গত ছয় মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট তিলেতিলে মেরে ফেলছে আমার ভাইকে…। আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কাল সুইসাইড করেছে। আমার কলিজার টুকরা ছাড়া আমি কিভাবে বাঁচব?’

শান্তা তাওহিদা আরো উল্লেখ করেন, ‌‘আমার ভাইটারে গত মাসেও আমি জিজ্ঞেস করেছি আমি কী তোর বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করব? আমার ভাই বলছে আপু আমি জিআরআই দিয়েছি, আমি ইউকে চলে যাব, আমার তো রেফারেন্স লাগবে। শিক্ষকরা ভয় দেখাইছে কিছু করলে রেফারেন্স লেটার দিবে না…।

তাইফুর রহমান প্রতীক শাবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

প্রতীকের সহপাঠী নিলয় কুমার দাস জানান, অনার্সে প্রথম হয়েছিল প্রতীক। অনার্সের পর থেকে তার সাথে আমার তেমন যোগাযোগ ছিল না। সে কোথায় থাকে সেটাও আমরা জানতাম না। মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টারে সে অসুস্থ ছিল, তাই রেজাল্ট কিছুটা খারাপ হয়েছে সম্ভবত।

এ বিষয়ে জানতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। মন্তব্য জানতে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউই ফোন ধরেননি।

বিএ-২১/১৩-০১ (শিক্ষা ডেস্ক)