অবশেষে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে জটিলতা। সমিতির সদস্যদের ক্ষোভের মুখে মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় চার মাস পর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ৩০ মার্চ। এরমধ্যে শুক্রবার রাতে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটে। পরপর তিনবার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরও ভোট না হওয়ায় সমিতির সদস্যদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করেন বলে জানা গেছে।

ক্ষুব্ধ সদস্যরা সমিতির সভাপতি আসিফ তাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়নের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এ সময় তালাবদ্ধ সমিতির দরজায় ‘সাংবাদিক সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি অবৈধ ও বিলুপ্ত’ এবং ‘শিবিরের মদদদাতা আসিফকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো’ লেখা দুটি ব্যানার দেখা যায়। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর তালা খুলে দেন সদস্যরা।

তালা ঝুলানোর আগে ২১ মার্চ সমিতির প্রথা লঙ্ঘন করে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক একক সিদ্ধান্তে সমিতির নতুন সদস্য পদ আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সদস্যপদ দেওয়ার দরখাস্ত আহ্বান করা হলে নতুন নির্বাচন সম্পর্কে কোনো কথা ছিল না।

এদিকে রাতে তালা ঝুলানোর আগে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগে শনিবার সমিতির দপ্তর সম্পাদক বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে বলা হয়, শুক্রবার রাতে কে বা কারা সমিতির পশ্চিম পাশের স্টিলের আলমারি থেকে ৭৮ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এর সঙ্গে সমিতির কার্যালয়ের মূল ফটকে দুটি তালা ঝুলিয়ে গেছে তারা।

তবে তালা ঝুলানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অর্থ চুরির অভিযোগ আনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছেন সমিতির অন্য সদস্যরা। নিজেদের অনিয়ম ঢাকতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নতুন নাটক সাজিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। ক্ষুব্ধ সদস্যরা বলছেন, বিদেশ ট্যুরের পর সাংবাদিক সমিতির অনেক টাকা ঋণ রয়েছে। সমিতির তহবিল একদম খালি।

এ বিষয়ে ডুজা সভাপতি আসিফ বলেন, তালা মারা ও অর্থ চুরির সঙ্গে সমিতির বাইরের কেউ যুক্ত বলে সন্দেহ তার। তবে তার ধারণা একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক নয়ন বলেন, সমিতির মধ্যে কোনো পক্ষ নেই। তালা মারা ও টাকা চুরির ঘটনার সঙ্গে কোনো সদস্য জড়িত নয়। তিনি বলেন, সমিতির মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর এক বছরের জন্য দায়িত্ব নেওয়া আসিফ ও মাহমুদুল হাসান নয়নের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। তিনবার মেয়াদ বাড়িয়ে ২২ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও হয়নি নির্বাচন। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর সাংবাদিক সমিতির নির্বাচনের পর ১৪ ডিসেম্বর বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেয়।

সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে (২০১৮ এর ১৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সভাপতি আসিফ ত্বাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন সাধারণ সভায় তাদের প্রভাব খাটিয়ে পরবর্তীতে সমিতির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়িয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করে।

এই মেয়াদ শেষ হলেও ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অবৈধভাবে সমিতির পদ ধরে রাখেন তারা। এরপর সমিতির নতুন করে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় ২৫ ফেব্রুয়ারি। সমিতির ওই সভায় ডাকসু নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইস্যু দেখিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ২২ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২২ মার্চ হয়নি নির্বাচন। পরে সমিতির সদস্যরা তালা ঝুঁলিয়ে দিলে আগামী ৩০ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে।

বিএ-০২/২৫-০৩ (শিক্ষা ডেস্ক)