নুসরাতকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যকারী রাবি শিক্ষার্থী মামুনের ভিন্ন সুর

ফেনীর আগুনে পুড়িয়ে দেয়া ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মামুন বিল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিব্রত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ। আর শিক্ষার্থীর দাবি তার আইডি হ্যাক হয়েছে। অভিযুক্ত মামুন বিল্লাহ সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ২০১৭ সালে অনার্স কমপ্লিট করেছে। মাস্টার্স এখনও করেনি বলে জানা গেছে।

এর আগে নুসরাতকে নিয়ে করা মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় শুরু হয়। তোপের মুখে এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী তার ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাকটিভ করে রেখেছেন। অনেকেই ওই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

জানা যায়, একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সেই মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতকে নিয়ে নিউজ করা হলে সেখানে রাবির ছাত্র মামুন বিল্লাহ একটি অশ্লীল কমেন্ট করেন। মামুনের এমন আপত্তিকর মন্তব্য অনেকেই তাকে ভবিষ্যৎ ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করে তার শাস্তির দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

মইনুল ইসলাম নামে এক ছাত্র তার ফেসবুকে লিখেছেন, এমন মানসিকতার একটি ছেলে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে? তাকে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান তিনি।

মর্তুজা বশির নামে এক ছাত্র মামুন বিল্লাহকে ভবিষ্যৎ ধর্ষক উল্লেখ করে লিখেন, আরেকটি অঘটন ঘটার আগেই সম্ভাব্য এই ধর্ষককে শাস্তি দেয়া হোক। ফুয়াদ নাসের লিখেছেন, মেনে নিতে কষ্ট হয়, এই ছেলেটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, মামুন বিল্লাহ এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন বলে জানান।

এ বিষয়ে মামুন বিল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। এ নিয়ে তিনি একটি জিডি করেছেন। তবে কোন থানায় এবং কখন জিডি করেছেন সেই বিষয়েও কিছু জানাতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয়বার ফোন দিলে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান জানান, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া রাফিকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এমন মন্তব্য করে থাকে তাহলে ঘৃণিত জঘন্য অপরাধ করেছে। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনার তদন্তে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, মাদরাসা প্রিন্সিপালের যৌন হয়রানির ঘটনা প্রকাশ করায় সোনাগাজীতে নুসরাত জাহান রাফির শরীরে আগুন দেয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বুধবার সাড়ে নয় টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয় রাফির।

বিএ-২০/১২-০৪ (শিক্ষা ডেস্ক)