ঢাবির ৯১ শিক্ষার্থীর তথ্য সিআইডির হাতে

ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের সহায়তাকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ শিক্ষার্থীর তথ্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিআইডির পক্ষ থেকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অভিযুক্ত এসব শিক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। পরে চলতি মাসের (এপ্রিল) দ্বিতীয় সপ্তাহে সিআইডিকে এসব তথ্য দেয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তদের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৩ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ৯, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৮, অর্থনীতি বিভাগের ৫, মনোবিজ্ঞানের ৫, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪, আইন বিভাগের ৪, ইসলামিক স্টাডিজের ৪, পদার্থবিদ্যার ৩, ফার্মেসির ৩, বাংলার ৩, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতির ৩, ফলিত রসায়নের ২, ইতিহাসের ২, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ২, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সের ২, ফিন্যান্সের ২, মার্কেটিং বিভাগের ২, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র অধ্যয়ের ২, স্বাস্থ্য অর্থনীতির ২, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের ২ এবং সংস্কৃতি বিভাগের ২ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ বৈকল্য, হিসাববিজ্ঞান, ইংলিশ ফর আদার ল্যাংগুয়েজ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান এবং পালি বিভাগসহ আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীর তথ্যও চেয়েছে সিআইডি।

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান বলেন, সিআইডির পক্ষ থেকে আমাদের কাছে এরকম একটি চিঠি এসেছে। সেখানে সিআইডি ভর্তি জালিয়াতি সংক্রান্ত ঘটনায় কিছু শিক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল। আমরা সেগুলো সিআইডিকে দিয়েছি।

জানা গেছে, সিআইডির চাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে- অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর পূর্ণাঙ্গ নাম, ঠিকানা, শিক্ষাবর্ষ, ইউনিট, বিষয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল, সেমিস্টার ভিত্তিক পরীক্ষার ফলাফল এবং পুনঃভর্তির বিস্তারিত তথ্য।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস এবং ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর সিআইডির পক্ষ থেকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তের জন্য সিআইডির জ্যেষ্ঠ সহকারী সুপার সুমন কুমার দাশ স্বাক্ষরিত চিঠিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়া হয়।

এদিকে, জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বুধবার মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারণলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ডাকসুসহ সকল ছাত্র সংগঠনের নেতারাও একমত রয়েছেন। তাদের ভাষ্য, প্রশাসন দ্রুত জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করুক। আর সেটি বাস্তবায়ন না হলে সবাই মিলে আন্দোলনের ডাক দিয়ে কলঙ্কমুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, জালিয়াতি করে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত সপ্তাহে ৩ জন গ্রেফতার হয়েছে , তারাও ভর্তি জালিয়াতের সঙ্গে জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আসছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর যে করণীয় আছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, গত বছরে আমরা ১৫ জনকে বহিষ্কার করেছি। এটা মেধাবীদের জায়গা, এখানে মেধাবীরাই থাকবে।

বিএ-২১/১৭-০৪ (শিক্ষা ডেস্ক)