ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আমরণ অনশনে অংশগ্রহণকারী ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার ভোর ৫টার দিকে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের করিডোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উপস্থিতিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে বুধবার সকাল থেকে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার মিছিল মিটিং ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে কুষ্টিয়া সদর থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ মাস ধরে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের আওতাভুক্ত পাঁচটি বিভাগের ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে তারা বিভিন্ন সময় স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি পালন করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছেন। এতে ফল না হওয়ায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন তারা। অনশনের এক পর্যায়ে ডিন অফিসের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
পরে তাদের উদ্ধার করতে রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন এই অনুষদের ডিন অধ্যাপক মমতাজুল ইসলাম। এ সময় তাকে এবং ছাত্র উপদেষ্টা পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে রাত ১১ টায় কুষ্টিয়া জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে পুলিশ প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আন্দোলনকারীদের সাথে সমোঝতা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে ভোর ৪টায় শিক্ষার্থীরা উপস্থিত প্রশাসনের প্রনিধিদের চারটি শর্তে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। এই মর্মে একটি কাগজে লেখা দাবিগুলোর নিচে স্বাক্ষর করেন ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা, বর্তমান ও সাবেক প্রক্টর। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এতে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়।
একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৪ টার দিকে পুলিশ তালা ভেঙ্গে অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বের করে নিয়ে যায়। এরপর ভোড় ৫টার দিকে মুঠোফোনে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে ২২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার মিছিল মিটিং ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। মাইকিং করে সকল শিক্ষার্থীদের পরিচয় প্রত্র বহন করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে ঘোষণা উপেক্ষা করে গ্রেফতার ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব
বিএ-১১/২৪-০৪ (শিক্ষা ডেস্ক)