সারাদেশে এসএসসির ফলে আপত্তি দেড় লাখের অধিক শিক্ষার্থীর

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে সারাদেশে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮ জন শিক্ষার্থী তাদের উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের জন্য আবেদন করেছে। এসএসসিতে পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে এটি রেকর্ড সংখ্যক আবেদন বলে জানা গেছে।

বুধবার দেশের সকল বোর্ডে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

জানা গেছে, এবার দশ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৫৮ হাজার ৭০ জন, বরিশালে ৮ হাজার ৪৮০ জন, চট্টগ্রামে ১৯ হাজার ১৮৩ জন, দিনাজপুরে ১২ হাজার ৫৪০ জন, রাজশাহীতে ১৫ হাজার ১৭৩ জন, সিলেটে ১০ হাজার ৫৪১ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ১৩ হাজার ২২৬ জন, মাদরাসা বোর্ডে ১১ হাজার ৭৪৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৬ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী খাতা পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছে।

অন্যদিকে একেকজন শিক্ষার্থী একাধিক বিষয়ের ফলাফল চ্যালেঞ্জের কারণে উত্তরপত্রের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার ৬২৯টিতে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে এক লাখ ৪০ হাজার ৯২৩টি, বরিশালে ১৫ হাজার ৫২৭টি, চট্টগ্রামে ৪৪ হাজার ২৯৭টি, দিনাজপুরে ২৬ হাজার ৯২৫টি, রাজশাহীতে ৩০ হাজার ২৩১টি, কুমিল্লায় ১৯ হাজার ২৬টি, সিলেটে ১৮ হাজার ৯১০টি, মাদরাসা বোর্ডে ২৩ হাজার ৭২৪টি এবং কারিগরি বোর্ডে ১৯ হাজার ৬৬টি উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের আবেদন জমা পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফলাফল চ্যালেঞ্জ করা এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ দেশসেরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীও আছে। বেশিরভাগ আবেদন পড়েছে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে। আবেদনের তালিকার ওপরের দিকে আছে ধর্মও। ১২টি পত্রের মধ্যে একেকজন শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন দুটি থেকে সর্বোচ্চ ৪-৫টি পত্র চ্যালেঞ্জ করার রেকর্ডও রয়েছে।

ঢাকা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গণিতের খাতা পুনঃমূল্যায়নের ২২ হাজার ১৫০টি। দ্বিতীয় স্থানে আছে ধর্ম ১৫ হাজার। আর তৃতীয় স্থানে ইংরেজি প্রথমপত্র ১২ হাজার ৭০০টি।

রাজশাহী বোর্ডে ৬ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী গণিত, ৩ হাজার ৬ জন রসায়ন, ২ হাজার ৩১২ জন ইংরেজি প্রথমপত্র এবং ২ হাজার ৯৭৮ জন ধর্ম বিষয়ের ফল পুনঃমূল্যায়ন চেয়েছে। এভাবে অন্যান্য বোর্ডে গণিত, ইংরেজি এবং ধর্ম বিষয়ের ফল নিয়ে বেশি অসন্তোষ শিক্ষার্থীদের।

বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, পাবলিক পরীক্ষার খাতা পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে সবকটি উত্তরে নম্বর দেয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে (কম্পিউটারে ফল প্রণয়নে পাঠযোগ্য ফরম) উত্তোলনে ভুল হয়েছে কি-না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কি-না এসব বিষয় দেখা হবে। বিষয়গুলো ঠিক থাকলে তবে সেই খাতা নতুন করে মূল্যায়ন করা হবে।

গত ৬ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফল প্রকাশের পরদিনই শুরু হয় খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন প্রক্রিয়া। চলে ১৩ মে পর্যন্ত। আবেদনকারীরা ফল জানতে পারবে ২ জুনের মধ্যে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, বরাবরের মতো অনেক পরীক্ষার্থী নিজেদের ফলে সন্তুষ্ট না হয়ে পুনঃনিরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। নিময় অনুযায়ী এসব খাতা নতুনভাবে নিরীক্ষা করা হবে।

তিনি বলেন, এসব আবেদনকারীর মধ্যে যারা এক বা দুই কম পাওয়ায় জিপিএ-৫ পাননি অথবা কৌতূহলী হয়েও কেউ কেউ আবেদন করে থাকে। তবে এবার ইসলাম ধর্ম বিষয়ের ফলে আপত্তি জানিয়ে বেশি আবেদন জমা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএ-০১/১৬-০৫ (শিক্ষা ডেস্ক)