৭০ হাজার ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের জন্য বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা!

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া, পরিবহন এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অভিনব এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নোয়াখালী পৌরসভা। শুক্রবার থেকে দুই দিনব্যাপী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১ ও ২ নভেম্বর ৬৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে। ১২০০ আসনের বিপরীতে এবার পরীক্ষা দেবেন ৬৮ হাজার ৭৬০ পরীক্ষার্থী। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা নোয়াখালীতে আসতে শুরু করেছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে থাকার জন্য ভালো কোনো হোটেল নেই। বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও সড়কে রাত কাটিয়েছেন।

তবে এবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আর কষ্ট করতে হবে না। কারণ বিনামূল্যে তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এর আগে গত বছর ভর্তি পরীক্ষার সময় নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ও বিভিন্ন ব্যক্তির উদ্যোগে কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, নোয়াখালী পৌরসভা, নোয়াখালী উপজেলা পরিষদ, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয়রা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য থাকা ও খাওয়ার সব ব্যবস্থা করেছেন।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেলের সভাপতিত্বে এক সমন্বয় সভা করা হয়। সভায় পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান বলেন, আগামী ১ ও ২ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা হলেও মূলত ৩১ অক্টোবর রাত থেকেই নোয়াখালীতে আসবে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

পৌরসভার পক্ষ থেকে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য বিনামূল্যে আবাসন, পরিবহন ও নিরাপত্তাসহ রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবহনের জন্য ২০০টি মোটরসাইকেল, ৪০০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও তিনটি মেডিকেল টিম ৩১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, টিয়া রঙের টি-শার্ট পরা ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতায় থাকবেন। খোলা হবে ৬টি বুথ। প্রতিটি বুথে থাকবে ৩০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক। শহরের স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, আবাসিক হোটেল ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে রাখা হবে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে ২০০টি মোটরসাইকেল থাকবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করবে। পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতায় নোবিপ্রবি ও নোয়াখালী পৌরসভার ওয়েব সাইটে সব তথ্য দেয়া হয়েছে।

পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্ল্যাহ খান বলেন, ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আসা শুরু হয়ে গেছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা তাদের জন্য থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।

নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, পরীক্ষার্থীদের কোনো প্রকার যেন অসুবিধা না হয় সেজন্য ৩০ অক্টোবর রাত থেকে তিন শতাধিক পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকেও মাঠে কাজ করছে পুলিশ।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য নিরাপত্তা, আবাসন, যোগাযোগ ও খাওয়ার ব্যবস্থার আয়োজন করেছি। এজন্য ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতিথেয়তা পাবে।

বিএ-০৮/৩১-১০ (শিক্ষা ডেস্ক)