রাবি শিক্ষকের প্লেকার্ড ছিড়ে দিলো সহকারী প্রক্টর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. রবিউল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর ও প্রজন্মলীগের সভাপতি আব্দ্ল্লুাহ আল মামুন এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোলাইমান চৌধুরী।

রোববার সকালে ৯ টার দিকে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অভিযোগ তুলে মো. সোলাইমান চৌধুরী প্লেকার্ড নিয়ে উপাচার্য বাস ভাবনের সামনে অবস্থান করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সোলাইমান চৌধুরীর সাথে যোগ দেন ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. সুলতান-উল ইসলাম, গণিত বিভাগের শিক্ষক আসাবুল হক,বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. সামাদী, মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মজিবুল হক আজাদ খান, ত্রিপল ইইই বিভাগের শিক্ষক তহিদুল ইসলাম সহ শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান চঞ্চল।

এই বিষয়ে সোলাইমান চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, সকালে ভিসি বাসভবনের সামনে অব¯’ান করলে হুমায়ুন সাহেব আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। হুমায়ুন কবির এর সাথে তখন সহকারী প্রক্টর রবিউল ইসলাম ও প্রজন্মলীগের সভাপতি আব্দুলাহ আল মামুন উপ¯ি’ত ছিলেন। আব্দুলাহ মামুন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসাবে আমার সাথে খারাপ আচরণ করার অধিকার রাখে না। এছাড়াও আমার হাতে প্লেকার্ড ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেয়।

তিনি আরো বলেন, রাবিউল ইসলাম এর স্ত্রীকে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ানোর জন্যই তিনি এ কাজ করেছেন। আমাকে মূলত এ কারণেই ভিসি বাসভবনের সামনে থেকে চলে যেতে বলে।

মো. রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি কারো সাথে অসৌজন্য আচারণ করিনি। আমি সহকারী প্রক্টর হিসাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেই সেখানে গিয়েছিলাম। যেহুতু সেই সময় ভিসি বাসভবনে শিক্ষক নিয়োগ এর ভাইভা বোর্ড চলছে তাই আমি সোলাইমান স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম যেন সে এই জায়গায় না দাঁড়িয়ে অন্য কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়।

অভিযোগের বিষয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন, একজন শিক্ষককে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় অডিনেন্স মেনে চলতে হবে। উপাচার্য বাসভবনের মত স্পর্শ কাতর জায়গায় সে প্রক্টরিয়াল বডির অনুমতি ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। আমি তার সাথে কোন খারাপ আচারণ করিনি। শুধুমাত্র সেখান থেকে চলে যেতে বলছি।

এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমি কারো সাথে খারাপ আচরণ করিনি। তিনি আমার শিক্ষক। একজন শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরণ করার প্রশ্নই উঠে না। উনি নিজের দোষ ঢাকতে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।”

উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত রায়ের আগেই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনের দফতরে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হবে। অথচ আগামী ২৭ জানুয়ারি এ বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত রায় প্রদানের দিন ধার্য করেছেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৬ তম সিন্ডিকেট সভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির অধিকাংশ সদস্যদের অভিযোগ, প্ল্যানিং কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। রায়ের পূর্বে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে তড়িঘড়ি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এজন্য সকালে নিয়োগ বোর্ড ডেকে সন্ধ্যায় সিন্ডিকেটে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।

বিএ-১৮/২৬-০১ (রাশেদ রাজন)