ধর্ষককে আজীবন বহিষ্কারের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

‘নারী হিসেবে, মেয়ে হিসেবে এই সমাজের একজন পুরুষকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। এমনকি নিজের কাছের বন্ধু কিংবা স্বামীকেও না। বাসাবাড়ি, যানবাহন, কর্মস্থল এমনকি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় নিজেকে নিরাপদ মনে হয় না।’

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।

বন্ধু কর্তৃক এক শিক্ষার্থীর ব্ল্যাকমেইলের ঘটনার পর সব ধরনের যৌন হয়রানি বন্ধ এবং শিক্ষা ও কর্মস্থল— সব ক্ষেত্রে নারীবান্ধব সমাজ নিশ্চিতের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? যে স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত দিতে হয়েছে। সেই স্বাধীন দেশে পঞ্চাশ বছর পরও নিত্যদিন নারীদের যৌন হয়রানি আর ধর্ষণের মতো রোমহর্ষক ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। দেশ যেন আজ ধর্ষণের চারণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

এমন ঘৃণ্য অপরাধ করেও অপরাধীরা আজ নির্দ্বিধায় পার পেয়ে যাচ্ছে। এর মূলে রয়েছে বিচারহীন সংস্কৃতি। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে সহজেই বেরিয়ে আসছে ধর্ষকের মতো অপরাধীরা।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- ধর্ষককে আজীবন বহিষ্কার; যৌন নীপিড়নবিরোধী সেলের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, আইনের ফাঁক গলিয়ে অপরাধী যাতে বের না হতে পারে সেজন্য প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেয়া, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি, বহিরাগতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং মোটরসাইকেলের স্পিড নিয়ন্ত্রণ। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর সারদ (২২) তার বান্ধবীকে (রাবি ছাত্রী) কাজলা সাঁকপাড়া এলাকার মেসে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে ওই ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী মামলা করেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সেলিম রেজা আসামিকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠান।

বিএ-১০/১২-০২ (শিক্ষা ডেস্ক)