ঝুঁকি মাথায় রেখেই রোববার খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা স্কুল-কলেজ খুলবে আগামীকাল রবিবার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। দেশে শুক্রবারও সংক্রমণের হার ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। সব মহলের দাবি আমলে নিয়ে দেড় বছরের অধিক সময় বন্ধ লেখাপড়ার ক্ষতি আর দীর্ঘায়িত না করে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন। বাস্তবতা বিবেচনায় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাসের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে হবে।

ক্লাস চালুর পরও প্রতিদিন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে প্রশাসন। কোথাও সংক্রমণের নির্দিষ্ট সূচকে ঝুঁকি চিহ্নিত হলে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা বন্ধ করা, সংক্রমণের হার নিয়ে যে কোনো গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়া নির্দেশনার কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক। গতকাল আমাদের সময়কে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ‘করণীয় এবং ‘বর্জনীয়’ কাজ সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারী সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কোনো বিষয়ে গুজবে কান দেওয়া যাবে না।

কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের কম। তবে সূচকের ঘর এখনো ৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বুধবার ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ, মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর আগের দিন ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মানদ- বিবেচনা নিলে সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক পরিম-লে কোলাহলের মধ্যেই থাকে। এ বিষয়টি বিবেচনা করে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন।

সর্বশেষ ঘোষণায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি শনিবার পর্যন্ত। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা মহামারীর পুরোটা সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কোভিড ১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি আর দীর্ঘায়িত না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে তিনি সংসদেও কথা বলেন। এর পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউনিসেফও বিভিন্ন বিবৃতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানায়। দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুল উদ্যোক্তারা, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

এ পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত ৩ সেপ্টেম্বর চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজগুলো খোলার জন্য আমরা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিনক্ষণ ঠিক করেন বলেও জানার তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং থাকবে। যাতে করে কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত না হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে দীপু মনি বলেন, এটি তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। এর পরও আমরা উপাচার্যদের সঙ্গে কথা বলব। যদি অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে খুলতে চায়, খুলতে পারবে।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। অর্থাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি এবং ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও শুরুতে এক সঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস হবে। ক্লাসে প্রথমে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিনই ক্লাস করবে। বাকি শ্রেণির ক্লাস শুরুতে এক দিন করে হবে। পরে অবস্থা বুঝে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে অনলাইন ও টেলিভিশনের ক্লাসও চলবে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকাগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ‘বেশিরভাগ’ শিক্ষক করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী যাদের এনআইডি কার্ড আছে তারা নিবিঘেœ টিকা নিচ্ছে। যাদের এনআইডি নেই তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোভিড প্রতিরোধ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গেল সপ্তাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

যেভাবে সংক্রমণ হার পর্যবেক্ষণ : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকায় (ইউনিয়ন, ওয়ার্ড) বিগত ১৪ দিনে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ জনের কম হয়, তা সর্বনিম্ন মাত্রা ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। নিম্ন মাত্রায় হবে যদি ৫ থেকে ২০ জন সংক্রমিত হয়। মাঝারি মাত্রা ঝুঁকি বলা হবে যদি ২০ থেকে ৫০ জন সংক্রমিত হয়। উচ্চ মাত্রা ঝুঁকি হবে যদি ৫০ থেকে ২০০ জনের কাছাকাছি হয়। এর পর যদি ২০০ জনের বেশি হয়, তা হলে অতি উচ্চমাত্রা ধরে নেওয়া হবে।

আরেকটি নির্দেশক হলো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন এলাকায় বিগত ১৪ দিনে আরটি-পিসিআর টেস্টে পজিটিভ রোগীর শতকরা হার ৩ শতাংশের নিচে থাকে সর্বনিম্ন মাত্রা, ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের নিচে থাকে, তা হলে নিম্ন মাত্রা, ৫ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ হয় মাঝারি মাত্রা, ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের নিচে উচ্চ মাত্রা এবং অতি উচ্চ মাত্রা হবে ১০ শতাংশের ওপর সংক্রমণ হলে। অতি উচ্চ মাত্রা ঝুঁকি চিহ্নিত হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হবে কিনা পুনর্বিবেচনা করবে কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বাড়লে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে শুক্রবার গণমাধ্যমকে জানান, সংক্রমণ কমেছে বলেই স্কুল-কলেজ খুলছে। সংক্রমণের হার আবার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই নেবে। আমরাও সেভাবেই পরামর্শ দেব। আমরা চাইব না আমাদের ছেলেমেয়েরা সংক্রমিত হয়ে যাক।

সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে হলে প্রত্যেকে যার যার নির্ধারিত দায়িত্বগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পালন আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সারাবিশ্বে যে জনস্বাস্থ্যবিধি চালু আছে সেগুলোকে বাংলাদেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করছি যে, দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এটি আমাদের করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় ভালো কাজ করেছে। এখন আমার মনে হয় সব দিক বিবেচনা করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ বা এসওপি প্রস্তুত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটি ও মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি দায়িত্ব নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর যেভাবে দায়িত্ব নির্ধারিত করা হয়েছে।

শিক্ষকদের দায়িত্ব : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বরের দেওয়া নির্দেশিত কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাদের মনোসামাজিক সহায়তা দেওয়া। শ্রেণি কার্যক্রমের শুরুতে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক মোটিভেশনাল ব্রিফিং দেওয়া। স্কুল খোলার অল্প কিছুদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা প্রশমনে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। আনন্দঘন পরিবেশের মাধ্যমে শ্রেণি পাঠদান করা। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার নিজে পালন করবেন ও শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবেন। কোনো শিক্ষক ক্লাস শেষে পরবর্তী শিক্ষক না আসা পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করবেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা গাইডলাইন এবং নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করবেন।

শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব : রুটিন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আগমন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দেশিত দূরত্ব মেনে প্রবেশ, শ্রেণিকক্ষে বসা ও প্রতিষ্ঠান হতে বহির্গমন করা। অসুস্থতা অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মাকে জানানো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে শ্রেণি শিক্ষককে তাৎক্ষণিক অবহিত করা। অকারণে শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে না যাওয়া। হাঁচি-কাশি, কফ ও থুথু ফেলার শিষ্টাচার মেনে চলা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজ করা। প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার পথে এবং অবস্থানকালে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরিধান এবং ন্যূনতম ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।

অভিভাবকদের দায়িত্ব : সন্তানকে মাস্ক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো নিশ্চিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করা। সন্তানকে নিজ স্বাস্থ্য সম্পর্কে ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করা। প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে যাওয়া ও সঠিক সময়ে বাসায় আসা নিশ্চিত করা। সন্তান অথবা পরিবারের কোনো সদস্য কোভিড আক্রান্ত হলে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে অবিলম্বে জানানো। প্রতিষ্ঠানের দেওয়া নির্দেশনা সন্তান ও অভিভাবক উভয়ই অনুসরণ করবেন। শুধু খাবার পানি বাসা হতে আনার বিষয়ে সন্তানকে উৎসাহিত ও নিশ্চিত করবেন। অন্য কোনো প্রকার খাবার বাসা থেকে নিয়ে না আসা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে বাইরের খাবার না খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করবেন।

গভর্নিং বডি-ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বর তারিখে পত্রে নির্দেশিত কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুকরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধিতে কোনো বড় পরিবর্তন এলে, নতুন বিধি অনুযায়ী কার্যক্রম বাস্তবায়নে সঠিক সহায়তা প্রদান। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের চাহিদা নিরুপণ এবং তা বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রতিষ্ঠানপ্রধান, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা।

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব : উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের প্রতি নির্দেশনা- মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়া নির্দেশনার কার্যক্রম তার উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইং থেকে দেওয়া দৈনিকভিত্তিক তথ্য ছক বিকাল ৪টার মধ্যে প্রেরণ নিশ্চিত করা। ঝরে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গৃহীত কার্যক্রম মনিটরিং করা। কোভিড-১৯ অতিমারী পরিস্থিতিতে তার আওতাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা।

জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধিতে কোনো বড় পরিবর্তন এলে, নতুন বিধি অনুযায়ী পরিকল্পনাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা বা পর্যালোচনা করে পরিবর্তন করা। পরিবর্তিত পরিকল্পনাটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাবেন। তার আওতাধীন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনার কোনো ব্যতয় ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে নিজে ব্যবস্থা নেবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব : মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়া নির্দেশনার কার্যক্রম তার জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজ উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে যথাযথভাবে মনিটরিং করছেন কিনা তা তদারকি করা। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। তার জেলায় সংক্রমণের হার আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩০ শতাংশের বেশি হলে নিবিড় সার্ভিল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে। তার দপ্তরে সংশ্লিষ্ট জেলার জন্য একটি কন্ট্রোলরুমের ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে যে নম্বরে সবাই জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারবে। তার আওতাধীন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনার কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে নিজে ব্যবস্থা নেবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

আঞ্চলিক উপপরিচালকদের দায়িত্ব : নিজ অধিক্ষেত্রাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়া নির্দেশনার নির্দেশিত কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো নিজ অঞ্চলের সব কর্মকর্তাকে অবহিত করা ও যথাযথ নির্দেশনা প্রদান এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা। তার দপ্তরে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য একটি কন্ট্রোলরুমের ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে বা যে নম্বরে সবাই জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারবে।

আঞ্চলিক পরিচালকদের দায়িত্ব : নিজ অধিক্ষেত্রাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা ‘গাইডলাইন’ নির্দেশিত কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো নিজ অঞ্চলের সব কর্মকর্তাকে অবহিত করা ও যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা। তার দপ্তরে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য একটি কন্ট্রোলরুমের ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে যে নম্বরে সবাই জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারবে। তার আওতাধীন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনার কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে নিজে ব্যবস্থা নেবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

এসএইচ-০১/১১/২১ (শিক্ষা ডেস্ক)