৬০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ : শিক্ষক ফারহানা সময় চেয়েছেন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চুল কাটার ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী, ওই বিভাগের শিক্ষক ও স্টাফসহ অন্তত ৬০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে গঠিত তদন্ত কমিটি। তবে সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে লিখিতভাবে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থতার কথা জানিয়ে সময়ের আবেদন করেছেন তিনি।

কমিটির সভাপতি ও রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌসী হিমেল জানান, চুল কাটার ঘটনার বিষয়ে রোববার সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে আলাদা আলাদাভাবে সবার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তবে অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্পন্ন না হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে কিছুটা দেরি হতে পারে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী প্রশাসনিক ভবনের সেমিনার কক্ষে সাক্ষ্য প্রদানকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় কমিটির

সদস্য সচিবসহ তিন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ভুক্তভোগী ১৪ শিক্ষার্থী, ওই বিভাগের পাঁচজন শিক্ষক, ঘটনার দিন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৩০ শিক্ষার্থী, অন্য বিভাগের ছয় শিক্ষার্থী, দুজন কর্মচারী ও একজন ক্লিনার কমিটির সামনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন।

তদন্ত কমিটির সভাপতি আরও জানান, সাক্ষ্য প্রদানের জন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে লিখিতভাবে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। তবে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থতার কথা জানিয়ে সময়ের আবেদন করে একটি ই-মেইল বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু অসুস্থতার বিষয়ে আবেদনের সঙ্গে কোনো চিকিৎসা সনদ যুক্ত করেননি। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে সোমবার যে কোনো সময় কমিটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।’

লায়লা ফেরদৌসী হিমেল আরও বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় শুধু চুল কাটার ঘটনা নয়, গত তিন বছরে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের দ্বারা বিভিন্নভাবে হওয়া নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন তার বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রবি ও সোমবার কোনো কর্মসূচি পালন করেননি। তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অপেক্ষা করছেন বলে জানা গেছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নোমান সিদ্দিকী শান্ত বলেন, দীর্ঘ ৭-৮ দিন টানা আন্দোলন কর্মসূচি পালনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ। যে কারণে সোমবার কোনো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। আমরা কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। দাখিলকৃত প্রতিবেদনে যদি আমাদের চাহিদার প্রতিফলন না ঘটে তাহলে আমরা আবারও লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আবদুল লতিফ বলেন, চুল কাটার অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে সত্য উন্মোচনে রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য লায়লা ফেরদৌসী হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কমিটির দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের ওপরে ভিত্তি করে সিনেট সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এসএইচ-০২/০৫/২১ (শিক্ষা ডেস্ক)