কেন্দ্রের বাইরে নবজাতক, মা পরীক্ষার হলে

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় সন্তান প্রসবের ২০ ঘণ্টা পর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন জাকিয়া সুলতানা নামে এক কিশোরী।

মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ওই কিশোরী মহম্মদপুর সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৮ নম্বর কক্ষে ব্যবসায় উদ্যেগ পরীক্ষায় অংশ নেন।

জাকিয়া সুলতানা উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর এমএফএ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের লাভলু মিয়ার মেয়ে।

জানা গেছে, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় জেলার শ্রীপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামের মো. এরশাদ মোল্যার সঙ্গে জাকিয়া সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ঢাকায় স্বামীর বাড়িতে থেকেই জাকিয়া সুলতানা লেখাপড়া চালিয়ে যান।

সোমবার দুপুর ১২টায় জাকিয়া সুলতানার প্রসববেদনা শুরু হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। বাড়ি থেকে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ব্যাটারিজিচালিত একটি অটোরিকশায় করে জাকিয়া সুলতানাকে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যান তার বাবা লাভলু মিয়া।

শিক্ষকরা জানান, জাকিয়া সুলতানা দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

এমএফএ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, মেয়েটি ভালো ছাত্রী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বিয়ে হয়। তবে অন্য মেয়েদের মতোই সে নিয়মিত ক্লাস করেছে। বাল্যবিয়ে ও সন্তান প্রসবের মতো কঠিন বিষয়গুলি তাকে দমাতে পারেনি।

তিনি আরো জানান, সদ্য সন্তান প্রসবের কারণে জাকিয়া সুলতানার পরিবার থেকে তাকে পরীক্ষা না দেওয়ার জন্য বলা হলেও সে কারও কথা শোনেনি। বরং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সে উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে। সে পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষক হতে চায়।

সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব এ.কে.এম নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা চলার সময় আমি ছাত্রীটির সার্বক্ষণিক খোঁজ নিয়েছি। সে খুব সাহসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

এসএইচ-১৩/২৩/২১ (শিক্ষা ডেস্ক)