আন্দোলন চলবে শাবিপ্রবিতে

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে অনশন ভেঙে আলোচনায় বসার প্রস্তাব নাকচ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করতে চাপ সৃষ্টির জন্য এর আগে তার বাসভবনের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে অনড় শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীরা উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান।

এদিকে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। এ সময় আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত দাবি মেনে নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

এ ছাড়া শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবির সমর্থনে প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনশন শুরু করে শিক্ষকদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’।

এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘একটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবসময় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে থাকে। যে কোনো অন্যায়-অন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে তারা রুখে দাঁড়ায়। আমাদের দেশের ইতিহাসের দিকে তাকালেও এমনটা দেখা যায়। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষেই শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডহীন করে দেওয়া হয়। এরপর যখনই শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামে, তখনই তাদের ওপরে নির্যাতন শুরু করা হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যায় নয়। শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু দাবি না মেনে পুলিশ ডেকে তাদের পেটানো হয়েছে। কোনো উপাচার্য এভাবে ছাত্রদের পেটাতে পারেন না। আর যে উপাচার্যের মনোভাব এমন, তিনি এ পদে থাকার সব যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে আমাদের আজকের এই কর্মসূচি।’

প্রতীকী অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোসাহিদা সুলতানা রিতু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমুদ্দীন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ডেভেলপমেন্ট বিভাগের কাজী মারুফ। ইংরেজি বিভাগের তাসনীম সিরাজ মাহবুব, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ফাহরিনা দূর্রাত, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তাহমিনা খানম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলি শেহরীন ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাইদ ফেরদৌস, মীর্জা তসলিমা, রেহনুমা আহমেদ প্রমুখ।

এসএইচ-০৭/২৪/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)