১২ এপ্রিল কী ঘটতে যাচ্ছে ঢালিউডে! (ভিডিওসহ)

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির আল্টিমেটাম, হিন্দিসহ বিদেশি ছবি প্রথম দিনেই দেশে মুক্তি না দিতে দিলে ১২ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ! পাশাপাশি আরও একটি শর্ত থাকছে তাদের—দেশীয় ছবির নির্মাণ বাড়তে হবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারের পাল্টা মন্তব্য, ‘প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হলেও সমস্যা নেই। বিকল্প ব্যবস্থায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হবে।’ তিনি জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে তার।

দুই পক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি মন্তব্যের যোগফল এটাই দাঁড়ায়, ১২ এপ্রিল থেকে সত্যি সত্যি তালা ঝুলবে দেশের সবক’টি প্রেক্ষাগৃহে!

১২ এপ্রিলের দিনটিকে ঘিরে এমনই উত্তাপ চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোতে। সমাধান না করেই প্রায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছেন তারা।

তবে সমীকরণটার আরও একটি বাঁক তৈরি করলেন ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। তিনি আজই (২১ মার্চ) জানালেন, ঘোষিত হল বন্ধের দিনই (১২ এপ্রিল) মুক্তি পাবে তার অভিনীত ছবি ‘শাহেনশাহ’। আর তার কিছু দিন পর রোজার ঈদে আসবে তার প্রযোজিত চলচ্চিত্র ‘পাসওয়ার্ড’। এরইমধ্যে ছবিটির জন্য অগ্রিম বুকিং পেয়েছেন শাকিব। মফস্বল এলাকার হলগুলো থেকেই রেকর্ড পরিমাণ বুকিংও পাচ্ছেন বলে জানালেন তিনি।

‘শাহেনশাহ’ ছবির গান, প্রকাশ পেয়েছে আজই (২১ মার্চ):

শাকিব খান বললেন, ‘‘পাসওয়ার্ড’ বিশাল পরিসরের চলচ্চিত্র। আমরা কলকাতা নয়, মুম্বাইয়ের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছি। এর গানসহ বেশ কিছু কাজ করবো ইউরোপে। পুরো টেকনিশিয়ান টিম নিয়ে কাজ হবে। এটি রোজার ঈদেই আসছে। আর ১২ এপ্রিল আসছে আরও এক ধামাকা, ‘শাহেনশাহ’। আমাদের যে হল বন্ধের সংকট তৈরি হয়েছে তা দূর করতে শুধু ছবি নয়, এমন বড় বাজেটের ছবিও দরকার। সেগুলোই হচ্ছে। আর হল মালিকরাও প্রচুর আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই মনে হয় না সংকট থাকবে।’’

তবে বছরে এমন দু-একটি ছবি দিয়ে পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে মনে করেন পরিবেশক সমিতির সভাপতি নওশাদ। এগুলো আল্টিমেটামের মধ্যে চলে এলে (এ সময়ে মুক্তি) তাতে ঘোষণার কোনও পরিবর্তন আসবে না, যদি সরকার বিষয়গুলো নিয়ে না বসে। তবে সরকারের দিক থেকেও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন বলে জানালেন তিনি।

ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘তথ্য সচিব, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতিসহ আমরা বেশ কয়েকজন আলোচনায় বসেছিলাম। তথ্য সচিবের কথায় আমি ইতিবাচক দিক পেয়েছি। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাও জানালেন ইতিবাচক কিছু একটা হবে। আমরা আশাবাদী।’

তবে এও জানালেন, ১২ এপ্রিলের মধ্যে সরকার কোনও উদ্যোগ না নিলে সব হল সত্যি সত্যিই বন্ধ করে দেবেন তারা।

হিন্দি ছবির প্রসঙ্গে নওশাদ বলেন, ‘হলিউড, চীনসহ অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্র মুক্তির প্রথম দিনে বাংলাদেশে এলেও হিন্দি ছবি কেন নয়? বিষয়টি নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা মনে করি, এখন সময় এসেছে ছবি উন্মুক্ত করে দেওয়ার। হল বাঁচাতে হলে এ ছাড়া আর উপায় নাই।’

পুরো বিষয়টি নিয়ে শাকিব খান বলেন, ‌‘প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হবে না। করারও দরকার নেই। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সবাইকে বসতে হবে। বড়মাপের ছবি বানাতে হবে। শুধু অভিনয় নয়, আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত ছবি বানাবো। ঝুঁকি নিয়ে হলেও বছরে অন্তত চারটি ছবি নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে আমার। সব ছবিই আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি করতে চাই। ছবির নির্মাণ বাড়লেই সব সমস্যার সমাধান হবে।’

আরএম-২৪/২২/০৩ (বিনোদন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন)