সরকারিভাবে বাংলাদেশে প্রথম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালের মার্চ-এপ্রিলে। অপ্রতিযোগিতামূলক এ উৎসবে ১৮ দেশের সর্বমোট ৩৫টি চলচ্চিত্র দেখানো হয়।
মূল উৎসবে প্রদর্শিত ১৪টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো পোল্যান্ডের দ্য কন্ডাক্টর, ইন্দোনেশিয়ার বাউ হাতি মামা, হাঙ্গেরির ম্যাগারক, জাপানের পোর্ট আর্থার, মঙ্গোলিয়ার আনফরগেটবল অটাম, চীনের লিটল ফ্লাওয়ার, বাংলাদেশের সূর্য-দীঘল বাড়ি ও ভারতের ‘হীরক রাজার দেশে’।
সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’র চিত্রনাট্য, ভাব, অন্তর্নিহিত বক্তব্য বিশ্লেষণ, সময়কালের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা বুঝতে কারো অসুবিধা হবার কথা নয়।
তৎকালীন সামরিক সরকার এ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সিনেমার বিনোদনকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়। এতে অবশ্য লাভবান হয় এ দেশের শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা। বিটিভির মাধ্যমে সম্প্রচারিত সিনেমাটি দেখে শহুরে মধ্যবিত্ত সরকারের সে চিন্তাকে খারিজ করে সিনেমাটির রাজনৈতিক বক্তব্যকে বেশ গুরুত্ব দেয় এবং সিনেমাটির সমাকালীন বাস্তবতা নিয়ে জোরেশোরেই আলোচনা শুরু করেন।
এটি বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন সামরিক সরকার কর্তৃপক্ষ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়। যা আজ অবধি বহাল আছে। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেকেই আমরা সিনেমাটি দেখে ফেলেছি, এ নিয়ে তুমুল আলোচনাও করেছি, করছি।
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিনেমাটি আজও নিষিদ্ধ, ফলে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে সিনেমাটি এখনও পৌঁছায়নি। তাদের কাছে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে।
তবে আমরা বিশ্বাস করি, প্রয়োজনীয় না অপ্রয়োজনীয় তার সিদ্ধান্ত মানুষই নিক, চাপিয়ে দিয়ে তাদের সেই মতামতকে খর্ব করা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না।
আজকে বেশ জোরেশোরেই একটি দাবি উঠেছে, বিশ্বের সকল দেশের সিনেমার প্রদর্শনী হোক আমাদের হলগুলোতে। এই দাবি মানা হবে কী হবে না তা জানি না।
তবে দাবিটি যৌক্তিক এবং তা বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি। তবে তার আগে হীরক রাজার দেশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে উন্মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা বোধ হয় আরো বেশি। সুজিত সজীব ফেসবুক আইডি থেকে সংগৃহিত
আরএম-২০/৩১/০৩ (বিনোদন ডেস্ক)