শাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আসছেন জিৎ

ঢাকার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে ঈদের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রতিবারের মতো এবারও মুক্তির মিছিলে শাকিব খানের দুটি ছবি। সেগুলো হলো ‘পাসওয়ার্ড’ ও ‘নোলক’। এছাড়াও ঈদে মুক্তি পাবে অনন্য মামুন পরিচালিত আবার বসন্ত ছবিটি। ঈদের ছবির তালিকা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এবার ঈদও শাকিবময় হতে যাচ্ছে।

সবই ঠিক ছিলো। কিন্তু এর মধ্যে শোনা যাচ্ছে ঈদে শাকিবের ছবির পাশাপাশি মুক্তি পেতে যাচ্ছে কলকাতার ছবি ‘শুরু থেকে শেষ’। এই ছবির নায়ক কলকাতার সুপারস্টার জিৎ। এতে দীর্ঘ দুই বছর পর জুটি বাঁধতে দেখা যাবে জিৎ ও কোয়েল মল্লিককে।

ছবিটি কলকাতায় তৈরি হয়েছে রোজার ঈদকে ঘিরে। একই সময়ে এটি সাফটা চুক্তিতে বাংলাদেশে আমদানি করবে শাপলা মিডিয়া।

ঈদে শাপলা মিডিয়ার ‘শাহেনশাহ’ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। শাকিব খানের একাধিক ছবি মুক্তির মিছিলে থাকায় এই ছবির মুক্তি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই ছবির মুক্তিকে কেন্দ্র করে শাকিব খান ও শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তাই নিজে পিছিয়ে গেলেও ঈদের বাজারের মাঠ একা শাকিবের উপর ছাড়তে নারাজ শাপলার মালিক।

শাকিবকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলতে তিনি আমদানি করে জিৎকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে চান। বর্তমানে শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান কলকাতায় অবস্থান করছেন। দেবের ‘কিডন্যাপ’ ও জিতের ‘শেষ থেকে শুর’ দুটো ছবি আমদানির সংক্রান্ত মিটিং সারছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেবের ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে না। তাই আপাতত জিত-কোয়েলের ছবিটিই নিয়ে আসবে শাপলা।

যদি ছবিটি আমদানি করে ঈদে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয় তাহলে শাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন জিৎ। এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাপলা মিডিয়ার ম্যানেজার বাদল। তিনি বললেন, ‘জিতের ‘শুরু থেকে শেষ’ ছবিটি আনার প্রক্রিয়া চলছে। এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। আগামীকাল বুধবার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে জানাতে পারবো।’

‘শেষ থেকে শুরু’ ছবির প্রযোজক জিৎ নিজেই। তিনিও চাইছেন তার ছবিটি ঈদে বাংলাদেশে মুক্তি পাক। সেজন্য নাকি তিনিও বেশ চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেলিম খানকে ছবিটি আমদানির ব্যাপারে সবরকম সাহায্য করতে।

এদিকে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বিদেশের সিনেমা মুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গেল বছর ৯ মে হাইকোর্টে নিপা এন্টারপ্রাইজের পক্ষে প্রযোজক সেলিনা বেগম বাংলাদেশের উৎসবের সময়ে বিদেশি ছবি মুক্তির ওপর স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেন। রিট নম্বর ৬২২৯। ১০ মে রিটকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী শফিক আহমেদ ও মাহবুব শফিক।

সেদিনই হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজা, পয়লা বৈশাখে যৌথ প্রযোজনা ও আমদানি করা ছবি মুক্তির ওপর স্থগিতাদেশ দেন। অভিযোগ আছে সেলিম খানের উৎসাহেই এই মামলা করেছিলেন নিপা নামের ওই প্রযোজক। তিনি নাকি সেলিম খানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।

ঈদে বিদেশি ছবি মুক্তির বৈধতা না থাকা সত্বেও এবার সেলিম খান নিজেই কেন বিদেশি ছবি আমদানি করছেন? এই প্রশ্নের জবাব শাপলা মিডিয়ার ম্যানেজার দিতে পারেননি।

এদিকে বিদেশি ছবি অবাধে আমদানির জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে হল মালিকরা। ঈদ উৎসবে বিদেশি সিনেমার মুক্তি নিয়ে তারা কী ভাবছেন? উত্তরে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘যেহেতু আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উৎসবে বিদেশি ছবি মুক্তি দেয়া তাই এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমদানিকারক যদি আইনের সমর্থন নিয়ে ঈদে বিদেশি ছবি মুক্তি দিতে পারেন তবে আমার বা কারোরই কিছু বলার নেই। আমি আসছে ঈদে হয়তো মধুমিতায় ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি চালাবো।

দেশের সিনেমা হলে দীর্ঘ দিন ভারতীয় সিনেমা মুক্তি দেওয়া বন্ধ ছিলো। বিদেশি ছবি মুক্তির দাবি জানিয়ে গত ১২ এপ্রিল থেকে দেশের সব সিনেমা হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেয় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।

পরে ২ এপ্রিল দেশের সিনেমা হল মালিক সমিতির সংগঠন চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতারা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে তার অফিসে ঘণ্টাব্যাপী সভা করেন। সভা শেষে সিনেমা হল বন্ধ ঘোষণা আপাতত স্থগিত করেন প্রদর্শক সমিতির নেতারা। এর পর আর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জাগো নিউজকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। সিনেমা হলে বিদেশি ছবি চালানোর পক্ষেই আন্দোলন করে যাচ্ছেন তারা। এদিকে দেশের চলচ্চিত্র পরিবার চায় না দেশের হলে চলুক ভারতীয় ছবি।

এসএইচ-২৩/১৫/১৯ (বিনোদন ডেস্ক)