যে তরুণীর কারণে সংসার ভাঙল দিয়া মির্জা ও সাহিলের

যে তরুণীর কারণে

ঐশ্বরিয়া রাইয়ের পর তাকেই বলা হতো বলিউডের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী নায়িকা। মোহনীয় চেহারা ও গ্লামারের মাদকতা দিয়ে অল্প সময়েই মন জয় করেছিলেন অনেকের। অভিনয়গুণে তাকে বলা হয় বলিউডের নতুন ঐশ্বরিয়া।

দেখতেও অনেকটাই বিশ্বসুন্দরীর মতোই তিনি। হাসলে গালে টোল পড়ে। চোখগুলোও সাগরের মতো নীলাভ। রূপ আর গুণের রোশনাই ছড়িয়ে বিটাউনে যাত্রা শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী দিয়া মির্জা।

কিন্তু নামের প্রতি খুব যে সুবিচার করতে পেরেছেন সেটি বলা যাবে না। মেধার বিচ্ছুরণ বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি। ক্যারিয়ারে সাফল্যের ফুল তেমন করে না ফুটলেও বিয়ের ফুল বেশ ঘটা করেই ফুটিয়েছিলেন। যৌবনের উন্মাদনায় ও অজানা এক মোহে পড়ে দ্রুতেই ঘর বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।

‘লাভ ব্রেক আপ জিন্দেগি’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে পরিচালক ও ব্যবসায়ী সাহিল সাঙ্গার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। চুটিয়ে প্রেম করার পর বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর বলিউডে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। কিন্তু সেই সংসার টিকিয়ে রাখতে পারেননি তারা। পাঁচ বছর এক ছাদের নিচে থাকার পর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।

দিয়া মির্জা ও সাহিল সংঘ বিয়ে করেন ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর। তারা বিয়ের আগে ও পরে ১১ বছর ধরে একে অপরকে চিনতেন, ভালোবাসতেন। বিয়ের আগে দিয়া আর সাহিল একই ব্যবসার অংশীদার ছিলেন। বিয়ের পাঁচ বছর পর পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে পরস্পর থেকে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানালেও এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ।

দিয়া-সাহিলের দাম্পত্য বিচ্ছেদ নিয়ে বলিউডে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন চাউর হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’ ছবির চিত্রনাট্যকার কণিকা ধিলোঁর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কে জড়িয়েছেন সাহিল। এক মাস আগেই দিয়া সেটি টের পেয়েছেন। তার পর থেকেই দিয়া আর সাহিলের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। সেই থেকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত।

সাহিলের ‘নতুন প্রেমিকা’ কণিকা ‘জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া’র পরিচালক প্রকাশ কোভেলামুড়ির সাবেক স্ত্রী। ওই দুজনের বিয়ে বিচ্ছেদ হয় দু’ বছর আগে।

বলিউড ইন্ডাস্ট্রির বরাতে ভারতের গণমাধ্যমের খবর, প্রায় মাস ছয়েক ধরে সাহিল ও কণিকা চুপিচুপি প্রেম করছেন করছেন। দিয়া প্রথম দিকে সেটি জানতে পারেননি। জানার পরে সেটি মেনে নিতে পারেননি।

সাহিলের প্রেমিকা কণিকা চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি একজন সাহিত্যিক। তার তিনটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সের স্নাতক তিনি। বাড়ি অমৃতসর। কণিকার সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার হাতেখড়ি শাহরুখ খানের সংস্থা ‘রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট’-এ।

২০০৭-এর ছবি ‘ওম শান্তি ওম’-এর ইউনিটে কণিকা ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। তার পরে ‘বিল্লু’ ছবিতে স্ক্রিন সুপাইভাজার। ‘রা ওয়ান’ ছবিতে স্ক্রিন প্লে ও ডায়ালগ বিভাগে। গত বছর ‘কোদারনাথ’ ও ‘মনমর্জিয়াঁ’ ছবিতে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়েছিল। কণিকা কাজ করেছেন তামিল, তেলুগু ছবিতে এবং দু’টি টেলিভিশন সিরিজেও।

বছর দুয়েক হল কণিকা-প্রকাশের বিয়ে ভেঙেছে। বিয়ে ভাঙার পরেও প্রকাশ আর কণিকা দু’জনে এই ছবিতে কাজ করেছেন একসঙ্গে।

পরিচালক প্রকাশ ইতিমধ্যে বলতে চেয়েছেন কেন তিন বছরের মধ্যেই তাদের বিয়ে ভেঙে গেছে। কিন্তু কণিকা কোনোদিন এই বিষয়ে এক বারের জন্যেও মুখ খোলেননি

২০১৪ সালে বিয়ে করেছিলেন প্রকাশ-কণিকা। দু’জনের সংসার ছিল হায়দরাবাদে। বিয়ের এক বছর পরেই কণিকা চলে যান মুম্বাইয়ে। প্রকাশ হায়দারাবাদেই থেকে যান। তিনি জানিয়েছিলেন, বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত দু’জনে একসঙ্গে নিয়েছেন। বিয়ের পরে বন্ধুত্বও অটুট রাখবে বলেছিলেন। রেখেওছেন তাই।

অন্যদিকে ‘লাভ ব্রেক আপ জিন্দেগি’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে পরিচালক ও ব্যবসায়ী সাহিল সাঙ্গার সঙ্গে পরিচয় হয় দিয়ার। দিয়া মির্জা ও সাহিল সংঘ বিয়ে করেন ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর। তারা বিয়ের আগে ও পরে ১১ বছর ধরে একে অপরকে চিনতেন, ভালোবাসতেন। বিয়ের আগে দিয়া আর সাহিল একই ব্যবসার অংশীদার ছিলেন। বিয়ের পাঁচ বছর পর পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে পরস্পর থেকে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বিচ্ছেদের বিষয়ে দিয়া মির্জা লেখেন- ‘১১ বছর ধরে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। এখন আমরা নিজেরাই আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি আরও লিখেছেন- ‘আমরা একে অপরের বন্ধু হয়ে থাকব। আর যখন প্রয়োজন হবে, আমরা পরস্পরের পাশে এসে দাঁড়াব। আমাদের পথ আলাদা হলেও আমরা একে অপরকে সবকিছু জানাব।’

এতদিন সাহিল ও তার পাশে থাকার জন্য দিয়া তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেননি দিয়া। তিনি লিখেছেন- ‘আমি আমার পরিবার আর বন্ধুদের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ তারা আমাদের ভাবনাকে অনুভব করেছেন। আমাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। আমরা এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য বা কথা বলতে চাই না। ধন্যবাদ।’

বিচ্ছেদ নিয়ে আপাতত আর কোনো কথা বলতে নারাজ দিয়া, ‘আমরা আমাদের পরিবার ও আমাদের বন্ধুদের সমস্ত ভালোবাসা এবং বোঝার জন্য ও মিডিয়া সদস্যদের অব্যাহত সহায়তার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। এ মুহূর্তে আমাদের গোপনীয়তার প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করব না।’

এই সুদর্শনী ২০০১ সালে ‘রেহেনা হে তেরে দিলমে’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন। শুরুর দিকে খুব একটা সাফল্য ধরা দেয়নি তার। বহুদিন পর ‘লাভ ব্রেক আপ জিন্দেগি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন। এর পরই ছবির পরিচালক সাহিলকে জীবনসঙ্গী হিসেবে খুঁজে নেন গ্লামার কুইন দিয়া।

দিয়া মির্জা ‘সঞ্জু’ ছবিতে অভিনয় করে সাড়া ফেলেন। দিয়া ‘মিস এশিয়া প্যাসিফিক’ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার ‘রেহনা হ্যায় তেরে দিল মে’ ছবিটি এখনও দর্শকদের মুখে মুখে। এ ছাড়া তার অভিনীত ‘লাগে রহো মুন্নাভাই’ ও ‘তুম কো না ভুল পায়েঙ্গে’ ছবিটিও তাকে খ্যাতি এনে দিয়েছে।

আরএম-০৭/০৪/০৮ (বিনোদন ডেস্ক)