সেই রাতে সালমানকে দেয়া ফোনকলগুলো শাবনূরের ছিল?

সেই রাতে

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ যেদিন নিহত হন, ঠিক তার আগে রাতে তার সিটিসেল নম্বরে কয়েকবার অভিনেত্রী শাবনূরের ফোন আসে। এই ফোনকলের কারণে স্ত্রী সামিরার সঙ্গে সালমান শাহর ঝগড়া হয়।

ঝগড়া এত বেশি ছিল যে, ওই রাতে ফোনটি আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেন সালমান। তবে সেই কলগুলো অভিনেত্রী শাবনূরের ছিল কিনা তা যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সালমানের স্ত্রী সামিরা দাবি, কলগুলো শাবনূরের ছিল। তবে শাবনূর তার জবানবন্দিতে ফোনকলের বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন, এত পুরনো ঘটনা তার মনে নেই।

সোমবার দুপুরে পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘটনার আগের রাতে অনেকবার শাবনূরের কল আসে। সালমান একবার কথা বলতে বলতে বাথরুমে চলে যায়। এমনকি এমন ফোন আসায় রেগে সামিরা বাসা থেকে বের হয়ে যান। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে সালমান তার সিটিসেল সেট ভেঙে ফেলেন।

সামিরা পিবিআই-কে জানিয়েছেন কলগুলো শাবনূরের ছিল। তবে এ বিষয়ে আর কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি পিবিআই।

শাবনূরও পুলিশকে দেয়া জবানবন্দিতে এমন কিছু স্বীকার করেননি।

তবে পারিপার্শ্বিক সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পিবিআই মোটামুটি নিশ্চিত, এই কলগুলো শাবনূরেরই ছিল। পিআইবিপ্রধান বনজ বলেন, ওই সময় আর কোনো প্রযুক্তি ছিল না। কেবল সামিরা জানেন। তিনি বলেছেন– কলগুলো শাবনূরের ছিল।

শাবনূর বলেছেন, প্রয়াত সালমান শাহ ছিলেন শুধুই আমার নায়ক, সহশিল্পী এবং বন্ধু। এর বাইরে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তার পরও যদি কেউ এ সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলে, সেটি শুনতে বিশ্রী লাগে।

পিআইবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সালমানের আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণের মধ্যে একটি হলো– শাবনূরের সঙ্গে সালমান শাহর অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা।

এর প্রতিক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে বাংলাদেশি গণমাধ্যমকে শাবনূর বলেন, আমাকে জড়িয়ে এমন কথা কেন বলা হচ্ছে, তা আমি জানি না। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত রুপালি পর্দার সালমান শাহর আনুষ্ঠানিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সিলেটের জকিগঞ্জে নানাবাড়িতে ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তার জন্ম। আদমজি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ড. মালেকা সায়েন্স ইনস্টিটিউট থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা ইমন ১৯৯২ সালে বিয়ে করেন বিউটি পার্লার ব্যবসায়ীর মেয়ে সামিরাকে। তখন তার বয়স ২২ বছর।

মঈনুল আহসান সাবেরের লেখা ধারাবাহিক নাটক ‘পাথর সময়’-এর একটি চরিত্র দিয়ে ইমনের অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু। মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরের চলচ্চিত্র-জীবনে ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করা সালমান শাহ ঢাকাই সিনেমার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।

নব্বইয়ের দশকে যারা বয়সে ছিলেন কিশোর-তরুণ, তাদের অনেকের হৃদয়েই সালমান শাহ বাংলাদেশের ‘সেরা রোমান্টিক অভিনেতা’ হয়ে থাকবেন।

আরএম-০৫/২৫/০২ (বিনোদন ডেস্ক)