স্টেজ শোর জন্য দম ফেলার সময় নেই: সালমা

স্টেজ শোর

সালমা। তারকা কণ্ঠশিল্পী। স্টেজ শোর পাশাপাশি টিভি আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শিগগিরই শুরু করবেন লোকগানের ধারাবাহিক সংকলনের কাজ। এ সময়ের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে-

‘তোমার অপেক্ষায়’ গানের পর কোনো রেকর্ডিং স্টুডিওতে আপনাকে দেখা যায়নি। গানের প্রকাশনা নিয়ে কী ভাবছেন?

এ মুহূর্তে নতুন গান প্রকাশ করার কথা আসলেই ভাবছি না। তিনটি গানের কাজ শেষ করেছি। কিন্তু রেকর্ড করার জন্য সময় বের করতে পারিনি। ডিসেম্বর থেকে স্টেজ শো নিয়েই ব্যস্ত আছি। আজ সুনামগঞ্জ, এরপর টাঙ্গাইল, বগুড়া, পটুয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহে শো আছে। এর বাইরেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্টেজ শোর কথা চলছে। স্টেজ শোর জন্য দম ফেলার সময় নেই এখন। তাই চাইলেও নতুন গান রেকর্ড করা হয়ে উঠছে না। আমিও চাইছি না, স্টেজ শো ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতে।

স্টেজ শোকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কারণ কী?

আমরা যারা পেশাদার শিল্পী, তাদের স্টেজ শো করেই বেঁচে থাকতে হয়। গানের অডিও, ভিডিও প্রকাশ করে যে টাকা পাওয়া যায়, তা সীমিত। অ্যালবাম কিংবা একক গান প্রকাশ করে সচ্ছলভাবে বেঁচে থাকা কঠিন। শুধু আমি নই, দেশের বেশির ভাগ শিল্পীর জন্য এটা সত্য। এ জন্য স্টেজ আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া সারাবছর একনাগাড়ে স্টেজ শো করার সুযোগ নেই। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটানা স্টেজ শো বেশি হয়। এ জন্যই এখন দেশ-বিদেশের মঞ্চে ছুটে বেড়াচ্ছি।

নতুন গানের কাজ কবে নাগাদ শুরু করতে পারেন?

গত বছরের বিভিন্ন সময়ে কিছু গানের কথা, সুরের কাজ শেষ করেছি। সংগীতায়োজন শেষ হলেই সেগুলো রেকর্ডিংয়ের পরিকল্পনা ছিল। এখন যেহেতু রেকর্ডিংয়ে যেতে পারছি না, তাই আগামী মাসে একটি একটি করে গানের কাজ শেষ করার ইচ্ছা আছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে হাতে কতগুলো স্টেজ শো আছে, তার ওপর। স্টেজের ব্যস্ততা না কমা পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।

আপনার সর্বশেষ প্রকাশিত গান ‘তোমার অপেক্ষায়’ নিয়ে কেমন সাড়া পেলেন?

‘তোমার অপেক্ষায়’ গান নিয়ে অসম্ভব সাড়া পেয়েছি। গান রেকর্ডিংয়ের সময়ই মনে হয়েছিল, এটি অনেকের ভালো লাগবে। হাবিব ওয়াহিদের সুর ও সংগীতের আলাদা একটা ছাপ আছে। যা অন্য সুরকারদের চেয়ে কিছুটা হলেও আলাদা; যা তার নিজস্ব ধরন। তার সঙ্গে কাজ করা মানে গায়কিতে নিজেকে ভেঙে নতুন করে উপস্থাপনের সুযোগ। সে সুযোগ যতটা সম্ভব কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। গান প্রকাশের পর যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তার মানে আমাদের এই আয়োজন বৃথা যায়নি।

বলেছিলেন লালন শাহের কালজয়ী গান নিয়ে কয়েক খণ্ডের একটি সংকলন প্রকাশ করবেন। সেই কাজের কতটুকু শেষ করতে পারলেন?

লালন শাহের গান নির্বাচন করা যে কঠিন কাজ, তা নতুন করে উপলব্ধি করছি। কোন গান রেখে কোন গান গাইব- এ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। এরপরও নিজের প্রিয় এবং যে গানগুলো কম শিল্পীর কণ্ঠে শোনা গেছে- তেমনই কিছু গান নিয়ে সংকলন প্রকাশের ইচ্ছা। ডিসেম্বর থেকে পুরোদমে কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু স্টেজ শোর ব্যস্ততায় সেটা হয়ে উঠেনি। অবশ্য এই সংকলনের কাজ নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাই না। অনেক সময় ও যত্ন নিয়ে লালন শাহর নির্বাচিত গানগুলো রেকর্ড করব। এই সংকলন করার পেছনে উদ্দেশ্য একটাই, নিজের শিল্পীসত্তাকে খুশি করা। কারণ, লালনের গান গেয়েই আমি আজকের সালমা হতে পেরেছি।

অডিও-ভিডিও প্রযোজক হিসেবে কোন ধরনের আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন?

প্রযোজক হিসেবে পরিকল্পনা একটাই, ভালো কিছু গান দর্শক-শ্রোতার কাছে পৌঁছে দেওয়া। এসএস মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে যতদিন আছি, ততদিন চেষ্টা করব, ভালো গানের প্রকাশনা ধরে রাখার। কিন্তু প্রযোজনার চেয়ে গান গাওয়াকেই গুরুত্ব দিতে চাই। কারণ, আমার আসল পরিচয় আমি একজন কণ্ঠশিল্পী।

আরএম-১১/২৭/০২ (বিনোদন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: সমকাল)