নতুন সিনেমা আসছে। দর্শক জানে?

নতুন সিনেমা

নতুন সিনেমা আসছে। দর্শক জানে? নতুন সিনেমার খবর দর্শকের কানে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব প্রযোজকের। এ কাজে তিনি বেশির ভাগ সময় সঙ্গে নেন অভিনয়শিল্পী ও পরিচালককে। যেমনটি হয়েছিল ঢালিউডের আয়নাবাজি ও দেবী সিনেমার ক্ষেত্রে। প্রচারণাকে সেই উচ্চতায় তো দূরের কথা, কাছাকাছিও নিয়ে যেতে পারছেন না ঢালিউডের এখনকার প্রযোজকেরা। ফলে যথাযথ প্রচারণার অভাব সিনেমার ভরাডুবির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখনকার ঢালিউডি ছবির অবস্থা শোচনীয়। তার ওপর প্রচারণার দুর্বলতায় আরও পিছিয়ে পড়ছে সিনেমা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নায়ক-নায়িকারাই নিজেদের ছবির প্রচারে নামতে চান না। অভিযোগ শোনা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাখো ভক্তের সঙ্গে যুক্ত হয়েও তাঁদের অনেকেই নিজেদের নতুন ছবিটি নিয়ে কোনো পোস্ট (স্ট্যাটাস) দেন না। ঢালিউডের বেশ কয়েকজন তারকার বিরুদ্ধে প্রচারে না থাকার অভিযোগ করেছেন প্রযোজকেরা। আবার এ নিয়ে পাল্টা অভিযোগও করেছেন অভিনয়শিল্পীরা।

কথা দিয়েও গত বছর মুক্তি পাওয়া অবতার, অন্ধকার জগৎসহ বেশ কয়েকটি ছবির প্রচারণায় ছিলেন না নায়িকা মাহিয়া মাহি। অবতার ছবির পরিচালক মাহমুদ হাসান সিকদার জানান, চুক্তি স্বাক্ষর ও গান প্রকাশের সময় মাহি কথা দিয়েছিলেন, মুক্তির আগে-পরে প্রচারে তিনি থাকবেন।

সিকদার বলেন, ‘মাহি আমাকে প্রচারের জন্য শিডিউল করতে বলেছিলেন। কিন্তু পরে আর ফোন ধরেননি।’ প্রচারণা নিয়ে মাহির সঙ্গে চুক্তি ছিল কি?

পরিচালক বলেন, ‘চুক্তি থাকতে হবে কেন? নিজেদের অভিনীত ছবির মুক্তিতে তো নায়ক-নায়িকাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’ অভিযুক্ত মাহি মনে করেন, ছবির প্রচারে প্রযোজকদের সুন্দর পরিকল্পনার অভাব আছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রচারে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হুট করে বললেই তো হয় না। ওই সময় আমার শ্বশুরবাড়ি সিলেটে থাকতে হয়েছে। তা ছাড়া আরেকটি ছবির শুটিংও ছিল।’

গত বছরের শেষের দিকে মুক্তি পাওয়া ডনগিরি ও পাগলামী ছবি দুটির প্রচারে দেখা যায়নি নায়ক বাপ্পী চৌধুরীকে। ডনগিরি ছবির পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল বলেন, ‘প্রচারে থাকবেন বলে বাপ্পী কথা দিয়েছিলেন। পরে ফোন ধরেননি। এমনকি ছবির বাকি দুই অভিনয়শিল্পী আনিসুর রহমান মিলন ও নায়িকা এ্যামি সহযোগিতা করেননি।’ এই অভিযোগ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে চাননি বাপ্পী।

গত বছরের শুরুতে মুক্তিপ্রাপ্ত আমার প্রেম আমার প্রিয়া ছবির প্রচারেও দেখা যায়নি নায়িকা পরীমনিকে। দাগ হৃদয়ে ছবির নায়ক বাপ্পী ও নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমও প্রচারণার মাঠে ছিলেন না। প্রযোজকদের হুটহাট সিদ্ধান্তকে দায়ী করে মিম বলেন, ‘বেশির ভাগ ছবি মুক্তির কোনো পরিকল্পনা কৌশল থাকে না। মুক্তির তারিখ আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকলে পরিকল্পনা করে প্রচার করা যায়।’

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তির কথা ছিল তিন ছবি হৃদয় জুড়ে, ডিটেকটিভ ও রবিবার। শেষ মুহূর্তে ডিটেকটিভ আসেনি। যদিও একটি ছবিরও ছিল না কোনো প্রচারণা। আমদানির ছবি রবিবার নিয়ে ছিল না টুঁ শব্দটুকুও। তবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার ও ফেসবুক পোস্টে কিছুটা প্রচারণা হয়েছিল হৃদয় জুড়ে নিয়ে। কলকাতার নায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার আসেননি, নায়ক নিরব মাঠে থাকলেও ছিলেন না তেমন সক্রিয়। তাঁর ব্যস্ততা ছিল ক্যাসিনো ছবির শুটিং নিয়ে।

প্রচারণাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হার্টবিট প্রডাকশনের চেয়ারম্যান তাপসী ফারুক। তিনি বলেন, ছবি মুক্তির আগে প্রচারের জন্য একটা ভালো পরিকল্পনা দরকার।

আরএম-০৭/২৯/০২ (বিনোদন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: প্রথম আলো)