বাসায় কী করছেন নায়ক-নায়িকারা

বাসায় কী

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিনোদন দুনিয়া স্থবির। শুটিং-ডাবিংসহ সব কার্যক্রম বন্ধ। দেশের বিনোদন ভুবনের কোনো তারকাই এখন আর ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। পাশাপাশি ভক্ত-অনুসারীদেরও নিরাপদে থাকার জন্য সচেতনতামূলক ভিডিও প্রকাশ করছেন ফেসবুকে। কিন্তু এ সময়ে ঘরে বসে কী করছেন তাঁরা?

এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। হঠাৎ করেই চার দেয়ালের মধ্যে এক অন্য জীবনে প্রবেশ করেছেন তারকারা। ২৪ ঘণ্টা একঘেয়ে জীবনযাপনকে আনন্দময় করতে ভিন্ন ভিন্ন পথও খুঁজছেন কেউ কেউ। শুধু ঘুমিয়ে দিন–রাত পার করছেন না। পাশাপাশি সিনেমা, বই, ঘর গোছানো ও শরীরচর্চার মতো কাজগুলোকে তাঁরা নিত্যদিনের তালিকায় যোগ করে নিয়েছেন।

গত চার দিন ঘর থেকে বের হননি নায়ক শাকিব খান। গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মীসহ সবাইকে ছুটি দিয়েছেন। একঘেয়েমি কাটাতে মাঝেমধ্যে বাড়ির নিচের তলায় নিজের অফিসকক্ষে সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বললেন, ‘মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোই করোনাভাইরাস ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের এখানে ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করার আগেই সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য ঘরেই থাকছি। ড্রাইভার, নিরাপত্তাকর্মীদের অগ্রিম বেতনসহ ছুটি দিয়েছি।’ কীভাবে সময় কাটছে? শাকিব বলেন, ‘টেলিভিশনে দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবরগুলো নিয়মিত দেখছি। একঘেয়েমি কাটাতে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন দেশের সিনেমা দেখছি।’

সিনেমার সব কার্যক্রম বন্ধ। দৈনিক আয় করে জীবন চালানো অল্প আয়ের সহকারী শিল্পী ও কুলাকুশলীরা পড়েছেন মহাবিপদে। তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন নায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিল। এফডিসির ওই সহাকারী শিল্পী ও কলাকুশলীদের সাহায্যের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। শাকিব খান এ রকম কোনো উদ্যোগ নেবেন? জানতে চাইলে শাকিব খান বলেন, ‘না। এ ধরনের কাজে এখনই নামছি না। প্রতিটি সচ্ছল শিল্পীর উচিত আগে তাঁদের কাছের মানুষ যেমন ড্রাইভার, গৃহকর্মী থেকে শুরু করে চারপাশের স্বল্প আয়ের আত্মীয়স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়া। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। সেটা করলেও অনেক বড় কিছু করা হয়। প্রথমে সেটাই করছি আমি। এরপর বড় ধরনের দুর্যোগ এলে সচ্ছল শিল্পীরা মিলে একত্র হয়ে একটা বড় তহবিল করা যেতে পারে।’

বেশ আগেই নিজেকে গৃহবন্দী করেছেন নায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। আট দিন ধরে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তিনি। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তায় আরও এক মাস তিনি ঘরেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন। করোনাভাইরাসে যতটা না নিজের জন্য, তার চেয়ে তিনি বেশি চিন্তিত মা–বাবাকে নিয়ে। সাবেক এই লাক্স তারকা বলেন, ‘মা–বাবা দুজনই ডায়াবেটিসের রোগী। এ কারণে আগে থেকেই ঘরে অবস্থান করছি আমি। তাঁদের চোখে চোখে রাখার চেষ্টা করছি।’ কিন্তু রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা ঘরে থাকা যায়?’ ঘরে কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন মিম? তিনি জানান, বাইরে সব ব্যায়ামাগার বন্ধ। ঘরে জিম করার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। মিম বলেন, ‘বাসায় জিম করার ব্যবস্থা রেখেছি, জিম করছি। সিনেমা দেখছি। যে কাজটি কখনো করা হয় না, ঘর গোছানো, সেটা করছি বেশি। ঘরের জিনিসপত্র সাজানোর কাজে সময় দিচ্ছি।’

ছয় দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে কাটাচ্ছেন নুসরাত ফারিয়া। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ঘরে থাকায় অনেক দিনের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন তিনি। ফারিয়া বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম টানা সিনেমা দেখব। কিন্তু একের পর এক কাজের ব্যস্ততায় তা সম্ভব হচ্ছিল না। যেহেতু এখন ঘরে থাকছি, বসে বসে বেশির ভাগ সময়ই মুভি দেখছি। পাশাপাশি পড়াশোনাটাও করা হচ্ছে।’

তিন দিন হলো ঘর থেকে বের হচ্ছেন না নায়িকা মাহিয়া মাহি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাসা থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা নেই বলে জানান তিনি। মাহি বলেন, ‘দিন দিন যেন আতঙ্ক বাড়ছে। কী হবে আমরা কেউই জানি না।’ ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশে এই নায়িকা বলেন, ‘বাইরে বের হলেই এই ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ আছে। তাই সবারই ঘরে অবস্থান করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’

ঘরে কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন মাহি? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কাজের মানুষদের ছুটি দিয়েছি আগেই। বাসায় প্রতিদিন নিজের কাজ নিজেই করছি। ঘর গোছাচ্ছি, সাজাচ্ছি। দিনে ও রাতে কিছু সময় ফেসবুক বন্ধুদের সঙ্গে থাকছি। আগে টেলিভিশনে খবর শোনা হতো না, এখন দিন–রাত অনেকবার খবর দেখছি।’

করোনাভাইরাসের এই আতঙ্কের মধ্যে চার দিন হলো ঘরে আছেন চিত্রনায়ক ইমন। পরিবারের নিরাপত্তার জন্যই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘বাসায় বউ ও দুই বাচ্চা। আমি ঘরবন্দী না হলেও বউ–বাচ্চাও নিরাপদ থাকবে না। এ কারণে একদমই বের হচ্ছি না।’

ইমন জানান, ঘরে অবস্থান করার কারণে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে বাচ্চারা। তিনি বলেন, ‘তারা এভাবে দীর্ঘ সময় বাবাকে কাছে পায় না। তাদের স্কুল বন্ধ। আমাকে কাছে পেয়ে তাদের খুব আনন্দে দিন যাচ্ছে।’ বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটানোর বাইরে আর কী করছেন? ইমন বলেন, ‘জিম বন্ধ হয়ে যাবে জেনে জিমের কিছু জিনিসপত্র বাসায় এনেছিলাম। প্রতিদিন জিম করছি। পত্রিকা, গল্পের বইও পড়া হচ্ছে। টেলিভিশনে দেশ-বিদেশের খবর দেখা হচ্ছে।’

আরএম-১৭/২৫/০৩ (বিনোদন ডেস্ক)