আমি ঘরে আছি, আপনিও ঘরে থাকুন

নাটক বা চলচ্চিত্রের শুটিং ফ্লোরেই যাদের দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায়, আজ তারা ঘরবন্দি। তারাই আজ আর পাঁচজনের মতো ঘরের কাজে ব্যস্ত। কেউ দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছেন, কেউ আবার বলছেন, এই তো বেশ আছি। বিনোদন অঙ্গনের তারকাদের কেমন কাটছে হোম কোয়ারেন্টাইন বা লকডাউন দিন?

এ এক অদ্ভুত অস্থির সময়! উদ্‌ভ্রান্ত সময়, বিমূর্ত অধঃপতনের সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ভাষায়- ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ।’ সত্যিই তো, বিশ্বব্যাপী ভয়াল নভেল করোনাভাইরাসে থেমে গেছে সব। বন্ধ হয়ে গেছে বিনোদন অঙ্গনের বিভিন্ন আয়োজন। বন্ধ হয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বড় বড় উৎসব, কনসার্ট ও সিনেমার কার্যক্রম। বন্ধ হয়েছে লাইট-ক্যামেরা আর অ্যাকশন। তাই তো এখন দেশ-বিদেশের সব তারকার হাতে অফুরান ছুটি। কিন্তু এই ছুটি কাটানোর জন্য নানা উপায় ভাবতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকাদের। কার্যত গৃহবন্দি তারা। তাহলে এই সময়ে কী করছেন? অনেকদিন পর হাতে ফাঁকা সময় হঠাৎ করেই এসে পড়েছে। কারও কাছে এ হলো পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা, কারও কাছে আবার বিড়ম্বনা।

কথা হচ্ছিল শাকিব খানের সঙ্গে। তিনি এখন সব শুটিং বাদ দিয়ে বাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আউটডোর শুটিংয়ে যাওয়ার কথা ছিল। পোস্টপন্ড হয়েছে। এই সময়টা আমি বাড়িতে থাকব। আমার মতো করে সবাই চেষ্টা কববেন যেন যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকা যায়। আমার কিছু সিনেমা দেখা পেন্ডিং রয়েছে। সেগুলো অনলাইনে দেখার চেষ্টা করছি। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রয়েছে। এবার সেগুলো পড়ব। এখন এমন একটা অবস্থার মধ্যে আমরা আছি। এ অবস্থা কতকাল চলবে, সেটা আমরা কেউই বলতে পারছি না। এই যে ১৫ দিন শুটিং বন্ধ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে কী প্রভাব পড়ছে, সেটা কিন্তু আমরা কেউই আন্দাজ করতে পারছি না। সেটা কীভাবে আমরা রিকভার করব তা জানি না। আমার মনে হয় প্যানিক হওয়া ঠিক হবে না। সারাবিশ্বের বিশাল ক্ষতি হচ্ছে। আর আমার মনে হয় মানুষের চেয়ে ইমপর্টেন্ট কিছু নেই। আমাদের ফাইট করতে হবে। মনে হয় এই সময়টা আমরা নিজেদের দিই। কী করেছি, কী করছি, কোথায় ঠিক করেছি, কোথায় ভুল করেছি।’

এ অবস্থায় জিমে যাচ্ছেন কি? ‘না, জিম তো বন্ধ হয়েছে। এই সময়ে পাবলিক জমায়েতে যাচ্ছি না। ঘরেই ফ্রি হ্যান্ড করছি।’ ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা তো বড় একটা ছুটি পাই না এমনিতে, তবে এই ছুটি পেয়েও কাজে লাগানো যাবে না। বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারি না তেমন, এই সুযোগে ওদের সঙ্গে কাটাচ্ছি। সিনেমা দেখছি, বই পড়ছি।’

হোম কোয়ারেন্টাইনের দিনগুলোয় আরিফিন শুভ প্রতিদিনই নিজের ফেসবুকে তার ভক্তদের ব্যায়ামের টিপস দেওয়ার পাশাপাশি গানও গাইছেন। তিনি বলেন, ‘আসলে এখন কিন্তু প্রত্যেকের মনের অবস্থা খারাপ। একনাগাড়ে বাড়িতে বসে থাকলে সবারই খারাপ লাগে। তাই নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্যই নানা কিছু করছি।’

রিয়াজ বলেন, ‘এমন অবসর শেষ কবে পেয়েছি তা মনে নেই। পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশের বাইরে বেড়াতে গিয়েছি। বেশ কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে এসেছি। কিন্তু ঢাকার বাড়িতে বসে এমন ছুটি অবিশ্বাস্য। এই অবসরের সময়টা বই পড়া, মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি সিনেমা দেখে কাটাচ্ছি। ফাঁকে ফাঁকে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। এভাবেই সারাদিন পার হয়ে যায়। আর এখন তো অ্যালার্ম ঘড়িটা বেশ দূরেই রেখেছি।’

আরিফিন শুভর মতো চঞ্চল চৌধুরীও প্রায় প্রতিদিন ফেসবুকে ছেলেকে নিয়ে লাইভে আসছেন। বিভিন্ন সচেতনতার পাশাপাশি গানও করছেন। চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমি আমার ভক্ত ও দেশের সাধারণ মানুষদের বলতে চাই, আপনারা নিরাপদ থাকার চেষ্টা করুন। আমাদের সরকার এই বিপর্যয়ের মুখে দারুণ কাজ করছে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন। বাড়িতে থাকাটাকে বন্দিদশা হিসেবে নেবেন না। এটাকে ধরে নিন একটা হলিডে ব্রেক। বাড়িতে থাকুন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকুন। একটা কথা মনে রাখবেন, সবকিছুই একদিন শেষ হয়। পৃথিবীর বড় বড় যুদ্ধও একদিন শেষ হয়েছে। ফলে ধৈর্য ধরুন, এই সময় একদিন কেটে যাবে। আমি নিজেও এই পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত নই। আমি যথাসম্ভব নিরাপদ থাকার চেষ্টা করছি। আর এই বিশ্বাস নিয়ে আছি, আজ না হোক কাল, এই সময়টা কাটবেই।’ সিনেমা দেখা, ওয়েব সিরিজে মন দেওয়ার পাশাপাশি বই পড়া। এ সবই সময় কাটানোর জানা উপায়। তবে বন্দিদশায় রান্নাঘরেই অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে অভিনেত্রীদের।

পূর্ণিমা বললেন, ‘যা বাসন ধুচ্ছি এ কয়দিন! ঘর মোছা, কাপড় কাচা সবটাই নিজের হাতে। ক্যাটরিনা কাইফও দেখলাম নিজে বাসন ধুচ্ছেন- বলে খিলখিলিয়ে হেসে উঠলেন অভিনেত্রী।’ তবে ঘরের কাজ নিজের হাতে করার অভ্যেস রয়েছে পূর্ণিমার।

জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘রান্না করতে বরাবর ভালোবাসি, তবে এত রিলাক্স হয়ে রান্না এই প্রথমবার করছি। এই সে দিন গরুর মাংস আর ইলিশ মাছ রান্না করলাম। আজকেই তো কেক বানিয়েছি। আগে একদিন পুডিংও তৈরি করেছি।’ ‘ফ্যামেলি ক্রাইসিস’ ধারাবাহিকের ঝিনুক মানে সারিকা সাবা মা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। যেহেতু এখন ছুটি। নেই অভিনয়ের ব্যস্ততা। তাই তো মায়ের সঙ্গে ঘরদোর পরিস্কার করা, রান্না করতেই হচ্ছে। আবার সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে মুমতাহিনা টয়ার। তিনি এই সুযোগে বরকে নিয়ে নতুন নতুন রেসিপি ট্রাই করছেন।

আবার এই ছুটিতে রূপচর্চায়ও মন দিয়েছেন অনেকেই। সেলফ-কেয়ারের জন্য এই সময় যে সেরা, সে আর কে না জানেন! তবে সব নায়িকাই যে এই সময়ে ডায়েট আর রূপ নিয়ে চিন্তিত, তা কিন্তু নয়। শুটিং নেই, তাই ডায়েটের চিন্তা ভুলেছেন মেহজাবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কী খাব, কতটা ওজন বাড়বে, এসবের ভয় না করে প্রতিদিনই নানান কিছু খাচ্ছি। ওজন বাড়লে পরে না হয় কমানো যাবে,’ হাসি তার কণ্ঠে। চিন্তা নেই। তানজিন তিশা বলেন, ‘বাড়িতে থাকার কারণে একটু পরপরই কিছু না কিছু খাচ্ছি। ফলে বলা যায় খাওয়া-দাওয়া যা হচ্ছে, তাতে ওজন বাড়বেই। তবে শুধু খাচ্ছি যে তা কিন্তু নয়, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজও করছি নিয়ম করে।’

ফোনে কথা বলতে ভালোবাসেন মাহিয়া মাহি। তাই ভিডিও কলেই বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। একই পথ নিয়েছেন পূজা চেরিও। তিনি বললেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। ভরসা ভিডিও কলিং।’

বাড়িতে থাকার বিষয় নিয়ে মেহজাবিন বলেন, ‘বাড়িতে থাকতে কাদের অসুবিধা হচ্ছে, জানি না। আমার তো প্রতিদিনই শুটিং থাকত। তাই বাড়িতে থাকতে ভালোই লাগছে।’

টিভি নাটকের প্রায় প্রতিটি শুটিং বাড়ি প্রত্যেকদিন প্রায় ১৪ ঘণ্টার শিফটে গমগম করত। সেই শুটিং বাড়িগুলোয় খাঁ খাঁ করছে এখন। নির্দেশ মেনে বন্ধ হয়েছে সব ধরনের শুটিং।

অন্য সবার মতো গৃহবন্দি অভিনেত্রী শার্লিন ফারজানা। তার অভিনীত ঊনপঞ্চাশ বাতাশ মুক্তির কথা ছিল ২৩ মার্চ। সেই মতো তিনি প্রচারের কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। এখন ছবি পিছিয়ে গেছে, তাই নায়িকা বাড়িতেই। তিনি বলেন, ‘আমি এক জায়গায় বসে থাকতেই পারি না। কী করে এতদিন বাড়িতেই আটকে থাকব, সেটাই ভাবছি! ওটিটি প্ল্যাটফর্মের আর নতুন কিছু দেখার নেই।’

আরেক কাজপাগল নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান বলছিলেন, ‘এতদিন কীভাবে বাড়িতে থাকব ভাবছি। আমার অফিস বন্ধ রেখেছি। সবাইকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছি।’

অন্যদিকে আরফান নিশো বলেন, ‘এই ছুটি পেয়ে তো লাভ নেই। কোথাও বেড়াতেও যেতে পারব না। ঘুমোচ্ছি আর সিনেমা দেখছি। তবে আমি মনে করি, সবার সচেতন হওয়া ছাড়া আর কোনো অপশন আমাদের হাতে অপশন নেই। ইমিউনিটি বাড়াতে পারে- এমন জিনিস খাওয়া উচিত। বাড়িতেই হালকা ব্যায়াম করা দরকার।’

চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বসুন্দরী’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ২৭ মার্চ। তিনি তার ছবি পিছিয়ে দিয়েছেন। চিন্তিত গলায় তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে ছবি মুক্তির তারিখ বদলাতে হয়েছে। পরে কবে ছবিটি মুক্তি দিতে পারব, তা এখন বলতে পারছি না।’

আর কিছুদিন পর পহেলা বৈশাখ। এই সময়ে বৈশাখের প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তাঘাট, পার্ক, রেস্টুরেন্টে মানুষের উচ্ছ্বাসে গমগম করার কথা। অথচ আজ মানুষ গৃহবন্দি। মানুষ ভয় পাচ্ছে। কেউ কাউকে স্পর্শ করছে না। ছড়িয়ে পড়ছে ভয়। অথচ ঘরের বাইরে রোদ। এই রোদ জানান দিচ্ছে, ভয় নেই। এই মহামারির দিন শেষ হবে একদিন। জয় হবে মানুষের।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

বিশ্বের বড় বড় দেশের কর্তাব্যক্তিরা এটাকে তুলনা করছেন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি হিসেবে। এটা তো এক অবিশ্বাস্য এবং অবিস্মরণীয় মহাযুদ্ধই। না হলে কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবছিল, আলো ঝলমলে সব বড় শহর ফাঁকা মরদ্যান হয়ে যাবে? আর লোকেরা ঘরে বসে দিন গুজরান করবে? আসেন আমরাও এটাকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি হিসেবেই লই। নিজের হাতের সঙ্গে যুদ্ধ করি, হাত পরিস্কার রাখার যুদ্ধ। নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করি, ঘুরতে না যাওয়ার, বেশি মানুষ এক জায়গায় না হওয়ার, আড্ডাবাজি না করার যুদ্ধ। বাঁইচা থাকলে এ সবই করতে পারব। আর সরকারের বন্ধুরা, আসেন করি টেস্টিং কিট সংগ্রহ করার যুদ্ধ, প্রতিটি হাসপাতালে করোনা মোকাবিলা ইউনিট বানানোর যুদ্ধ, ডেজিগনেটেড নার্স এবং ডাক্তারের দল বানানোর যুদ্ধ, লোকজনের ঘরের ভেতর রাখার যুদ্ধ। জাপানি গবেষকদের একটা রিপোর্ট দেখলাম। সেখানে তারা করোনা সম্পর্কে আগে যা জানতেন, তার বাইরেও নতুন তথ্য হাজির করছেন। আগে জানতাম, ড্রপলেট তিন ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। এখন জানলাম, মাইক্রো ড্রপলেট বলে একটা জিনিস আছে, যেটা একটা ক্লাসরুমের সমান জায়গায় ভেসে বেড়াতে পারে বিশ মিনিট এবং গবেষকরা অনুমান করছেন, মাইক্রো ড্রপলেট ভাইরাস বহন করতে পারে। সুতরাং, সমাধান একটাই, ঘরে থাকুন। আর যদি বাইরে যেতেই হয়, যেমন- ডাক্তার, পুলিশ, সাংবাদিক, ব্যাংকার, সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ভাইবোনদের বাইরে যেতেই হচ্ছে- মাস্ক পরুন, মাস্ক পরুন, মাস্ক পরুন। কিছুদিন আগে ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে হংকংয়ের প্যানডেমিক বিশেষজ্ঞ হংকংবাসীর সারাবছর মাস্ক পরার কথা উল্লেখ করেছেন, হংকংয়ের করোনা নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে। যা হোক, এই জিনিস আমাদের ভালো রকম সাফার করাতে আসছে। প্রস্তুত হোন। আর ওয়াদা করেন, প্রকৃতি, বন, বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আবাস ধ্বংস হয়- এমন কাজ আমরা যেন আর না করি।

হানিফ সংকেত

করোনা কভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশসহ প্রায় পুরো বিশ্বই এখন আক্রান্ত, আতঙ্কিত। এই মুহূর্তে এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রধান ও উত্তম সচেতনতা হচ্ছে ঘরে থাকা, যাতে রোগটি সংক্রমিত হতে না পারে। আশার কথা হচ্ছে, গত কয়েক দিনে ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ ঘরে থাকতে শুরু করেছেন এবং রাস্তাঘাটও ফাঁকা। তবে যারা লম্বা ছুটি পেয়ে দলে দলে গায়ে গা লাগিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যার যার গ্রামের বাড়িতে গেছেন এবং যারা করোনা প্রতিরোধক নির্দেশনা না মেনে অসচেতনভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনার এই অসচেতনতা যেমন আপনাকে আক্রান্ত করতে পারে, তেমনি আপনার দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারে আপনার পরিবারসহ আরও অনেকেই। সুতরাং অনতিবিলম্বে আপনারাও করোনা প্রতিরোধক নিদের্শনাগুলো মেনে চলুন এবং নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করুন। মনে রাখবেন, আমরা কেউই এই রোগের ঝুঁকিমুক্ত নয়। সুতরাং প্রয়োজন সচেতনতা এবং সর্বাত্মক সতর্কতা।

এ সময় ঘরে থাকা মানুষেরা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার সঙ্গে দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকেন সর্বশেষ সংবাদ জানার জন্য। তবে অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে লক্ষ্য করছি করোনার মতো ভয়ংকর সংক্রমক ব্যাধির কারণে চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতেও ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এখনও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু মাস্ক পরে ভিড়ের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের কাজ করতে দেখা গেছে। সবার নিরাপত্তার স্বার্থে গণমাধ্যম কর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের [যারা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন] ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বা পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ জানাচ্ছি। আর একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য- এখনও অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সুরক্ষা উপকরণ বা পিপিই পাননি বলে সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম। যেহেতু চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাই সরাসরি রোগীদের সংস্পর্শে এসে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন, সুতরাং তাদের পিপিই বা সুরক্ষা উপকরণই প্রয়োজন সর্বাগ্রে। মনে রাখতে হবে, এই মুহূর্তে আমাদের সব সমস্যার বড় সমস্যা এই করোনা। এ থেকে মুক্তির জন্য যা যা করা প্রয়োজন সেটাই করতে হবে সবার আগে। আমাদের সবার সম্মিলিত সচেতন যুদ্ধেই সম্ভব হবে এই করোনা প্রতিরোধ। আসুন আমরা সবাই করোনা প্রতিরোধের নিয়মগুলো মেনে চলি। সবাই নিরাপদে থাকি। একটি বিপদমুক্ত বিশ্বে যেন আমরা আবার বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারি- এই প্রত্যাশা করছি।