ব্যর্থতা দিয়ে শুরু হয়েছিল এসব নায়িকার

প্রথম ছবিতে সাফল্য কে না চান! তাই বলে সবার ভাগ্যের শিকে কি ছেঁড়ে? কারও কারও হাতে সফলতা ধরা দেয়। কেউ কেউ নেন ব্যর্থতার স্বাদ। পরে সফল হলেও প্রথম ছবিতে কারা ব্যর্থ ছিলেন, কারা প্রথম ছবির ব্যর্থতা থেকে কুড়িয়েছিলেন আগামীর সঞ্চয়—এমনই কয়েকজন চিত্রনায়িকার কথা শুনব আজ। এই তালিকায় এমন অনেকের নাম আছে, যাঁদের প্রথম ছবিতে ব্যর্থ বললে ভক্তদের মন সে কথা বিশ্বাস করতে চায় না। কিন্তু তাঁরা নিজেরা যেমন এই ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন, সিনেমার মানুষদের কাছেও তা গোপন নেই। আসুন, দেখে নিই কোন নায়িকারা প্রথম ছবিতে সফল হতে পারেননি।

শাবনূর

এ দেশের সিনেমার ইতিহাসে সফল নায়িকাদের তালিকা করলে নাম থাকবেই শাবনূরের। অনেক হিট ছবির কারণ হয়েছেন তিনি, অথচ তাঁরই প্রথম ছবি না চলায় কটু কথা শুনতে হয়েছিল তাঁকে। এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ হিট হয়নি। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি মৌসুমি অভিনীত প্রথম ছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’–এর মতো হিট হবে বলে ভাবা হয়েছিল। সেই আশার গুড়ে বালি ফেলে ফ্লপ হয়ে যায় ‘চাঁদনি রাতে’। প্রথম ছবির ব্যর্থতা বরং শাবনূরের আগামীর পথের ইন্ধন জুগিয়েছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যে হিট ছবির মিছিলে এসে যায় শাবনূর অভিনীত ছবির নাম। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সিনেমার সবচেয়ে বড় নায়িকার নাম হয়ে যান শাবনূর।

পূর্ণিমা

পূর্ণিমার মতো সফল নায়িকা আর কে দেখেছে কবে! রূপে, গুণে, সফলতায় তাঁর জুড়ি ঢালিউডে মেলা ভার। কিন্তু এসব প্রশংসা তাঁর জোটেনি প্রথম ছবি মুক্তির পর। এর জন্য তাঁকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। তত দিন তাঁকে ব্যর্থ নায়িকার তকমা শরীরে জড়িয়ে বসে থাকতে হয়। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় পূর্ণিমার প্রথম ছবি ‘এ জীবন তোমার আমার’। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ছবিটি ব্যবসায় সুবিধা করতে পারেনি। একই দিনে মুক্তি পেয়ে নবাগতা তামান্না অভিনীত ‘ভন্ড’ সুপারহিট হয়ে যায়। বুঝুন, সেদিন কেমন লেগেছিল পূর্ণিমার! সেই ব্যর্থতা থেকে অবশ্য অচিরেই উঠে দাঁড়ান পূর্ণিমা।

সিমলা

প্রথম ছবিতেই রাতারাতি তারকা বনে যাওয়ার কথা ছিল সিমলার। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি ‘ম্যাডাম ফুলি’। ছবিটি হিট করাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন পরিচালক-প্রযোজক শহীদুল ইসলাম খোকন। কিন্তু সিনেমা প্রেক্ষাগৃহগুলোতে তিনি পর্যাপ্ত দর্শক টানতে পারেননি। সিমলার ভাগ্যও বিড়ম্বিত হয় ছবির ব্যর্থতায়। অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, ‘ম্যাডাম ফুলি’ কয়েক বছর পর টেলিভিশনে প্রিমিয়ার হলে জনপ্রিয়তা পান সিমলা। আর টিভিতে প্রচারিত হয়ে সারা দেশে সাড়া ফেলে ‘ম্যাডাম ফুলি’। ছবিটি সিনেমা হলে হিট হলে সিমলার ক্যারিয়ার অন্য রকম হতে পারত। এ রকম ব্যর্থতা সত্যি মেনে নেওয়া যায় না!

নুসরাত ফারিয়া

২০১৫ সালের ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় নুসরাত ফারিয়ার প্রথম ছবি ‘আশিকী’। কত আশাই না ছিল যৌথ প্রযোজনার ছবিটি নিয়ে। উপস্থাপনা থেকে সিনেমায় নেমে সাফল্যের হাতছানি ছিল। বড় ব্যানারের নতুন তুরুপের তাস হয়ে সাফল্যের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সব আশায় জল ঢেলে দিয়ে ‘আশিকী’ ফ্লপ করে বসে। যেখানে ছবি ব্যবসায় নতুন রেকর্ড করবে, দলে দলে তারুণ্য মেতে উঠবে ‘আশিকী’-বন্দনায়, সেখানে ছবিটিকে শুনতে হয় গালমন্দ।

পরীমনি

২০১৫ সালে মুক্তি পায় পরীমনি অভিনীত প্রথম ছবি ‘ভালোবাসা সীমাহীন’। শাহ আলম মণ্ডল পরিচালিত ছবিটিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন আনিসুর রহমান মিলন ও জায়েদ খান। প্রথম ছবিতেই মৌসুমি, শাবনাজ, পপির মতো তুলকালাম ঘটিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ উত্তেজনা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়। আর প্রথম ছবিতে ব্যর্থতার স্বাদ চেখে দেখতে হয় পরীমনিকে।

বর্ষা ও আরও কয়েকজনের কথা

২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ ছবিতে অভিষেক ঘটে বর্ষা ও ববির। ছবিটি না চলায় ব্যর্থতার ভাগীদার হতে হয় প্রত্যেককে। ২০০১ সালে অভিষেক ঘটে আঁচলের। তাঁর অভিনীত প্রথম দুটি ছবি ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভুল’ ও ‘বেইলি রোড’ চলেনি। আইরিন অভিনীত প্রথম ছবি ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’ ছবিটিও ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। এ ছবিটিও তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।