পরীমনিকে নিয়ে পুতুলের ‘হাহাকার’!

জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা পরীমনি-শরিফুল রাজের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের পর শনিবার রাতে হয়ে গেল বিয়ে।

বিয়েতে অতিথির তালিকায় ছিলেন তিন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চয়নিকা চৌধুরী ও রেদওয়ান রনি। সঙ্গে ছিলেন দুই পরিবারের স্বজনরা।

এছাড়া বিয়েতে উকিল বাবার ভূমিকায় ছিলেন জনপ্রিয় নির্মাতা রেদওয়ান রনি এবং বিয়ের দেনমোহর ধার্য করা হয় ১০১ টাকা।

রাজ-পরীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার একটি ছবি নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আর এই বিষয়টি বেশ নাড়া দিয়েছে সংগীতশিল্পী, উপস্থাপিকা ও লেখিকা সাজিয়া সুলতানা পুতুলকে। এ নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন পুতুল। যা এরইমধ্যে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

পাঠকদের জন্য পুতুলের দেয়া সেই পোস্টটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো।

‘পরীমনিকে কখনো লেখার প্রসঙ্গ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি বলে কখনো লিখিনি কিছুই। মানুষ তার স্বাধীন সত্তায় বাঁচবে এই বিশ্বাসের মানুষ আমি। মানুষের ব্যক্তিগততায় তাই কৌতূহলী হই না। কিন্তু এই ছবিটা চোখে পড়ার পর তাকিয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ।

ছবিটা যদিও একটা কৌতুকে পরিণত হয়েছে এরই মধ্যে। কিন্তু ছবির মনস্তত্ত্বটা একটু অন্যরকম। একজন নারী যখন সমাজে নিন্দিত হতে হতে অসম্মানের তলানিতে চলে যায়, অনেক কিছু সয়ে আসা একজন নারী যখন সমাজের পুরুষদের কাছ থেকে গালি ছাড়া আর কিছুই প্রত্যাশা করার সাহস হারিয়ে ফেলে, জীবনের নানান বাঁক দেখে আসা একজন নারী যখন সর্বস্তরে কৌতুকের বিষয় হয়ে যায়, তখন জীবনের বিশেষ একটা মুহূর্তে চোখে জল আসা খুব স্বাভাবিক, তা পর্দার জীবনে তিনি যত বড় অভিনেত্রীই হোন না কেন।

এই ছবিটায় তিনি একা বসে নেই, তার ভিতরে আরেকটা প্রাণের অস্তিত্ব। পুরুষশাসিত সমাজে নানান রঙের পুরুষের ভিড়ে সবচাইতে বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য মনে হওয়া পুরুষটিকে পাশে নিয়ে একটা বিশেষ মুহূর্ত উদযাপনের সময় তার মনে হয়তো যতোটা না আনন্দ ছিলো, সে রকমই ছিল কিছু হাহাকার আর স্মৃতি রোমন্থন। সেই স্মৃতি অবশ্যই সুখস্মৃতি নয়। বিয়ের আসরে বসে অভিভাবকহীন একটা সাধারণ মেয়ের যে হাহাকার জাগতে পারে, যে মুখগুলো চোখে ভাসতে পারে, তার ক্ষেত্রেও হয়তো তা হয়েছে।

এখানে তাকে আক্রমণ করার সবচেয়ে সহজ অস্ত্রটি হলো, এই অনুভূতি তো তার জীবনে প্রথম নয়। আরো একাধিকবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার অভিজ্ঞতা তো তার আছে। কিন্তু একটা জীবন যখন কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকে তখন মানুষের অনিশ্চয়তা বাড়তে বাড়তে আকাশ ছোঁয়। সেখানে আপাতদৃষ্টিতে একটা নিশ্চিন্ত সমাধানের পথ খুঁজে পেলে সেই কান্নাটা আনন্দেরও হতে পারে।

তার এই কান্না বেদনার নাকি আনন্দের তা নির্ধারণ করা সমাজের কাজ নয়। আপাতত অভিনন্দন আর শুভকামনা জানানো যেতেই পারে পরীমনিকে। যে কাঙ্ক্ষিত ভালোবাসার খোঁজ করতে করতে জীবনটা এতোটা নাটকীয় হলো, তা এবার সত্যি হয়ে ধরা দিক’।

এসএইচ-০৬/২৫/২২ (বিনোদন ডেস্ক)