টয়লেটে চাকরি করছেন জনপ্রিয় ব্যান্ডশিল্পী

নব্বই দশকের ব্যান্ডদল ‘ব্লু হরনেট’-এর ভোকাল মনসুর হাসান অভাবের তাড়নায় পড়ে পাবলিক টয়লেটে চাকরি করছেন। ৫৪ বছর বয়সী এই গায়ক দীর্ঘদিন থেকেই শারীরিক নানা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা খরচ আর জীবন চালিয়ে নিতে এ চাকরি করছেন বলে জানালেন মনসুর। চট্টগ্রামের জামালখান মোড়ের এক পাবলিক টয়লেটের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে। মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতনে সেখানে চাকরি করছেন তিনি।

এ বিষয়ে মনসুর বলেন, ‘ব্যান্ডদল গঠন করার পর আমি পাঁচশ’র অধিক স্টেজ শো করেছি। দুই থেকে আড়াই মাস পর স্টেজ শোয়ের জন্য বাইরে যেতাম। ভারতেও গান গাওয়ার জন্য আমি অফার পেয়েছিলাম। সেসময় ব্যক্তিগত কারণে তা আর হয়নি। অসুস্থতার কারণে আমার গান গাওয়া হয়নি। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে অনেক টাকা চলে গেছে। বর্তমানে মা-বাবা কেউ নেই। ১২ হাজার বেতনে চাকরি করছি। এভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে আমার।’

জানা গেছে, সারাদিন টয়লেটের থাকেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মনসুর হাসান। সেখানেই পাশের একটি হোটেল থেকে খাবার খান। রাতে ঘুমান বেঞ্চে। এভাবেই প্রতিনিয়ত দিন পার করছেন তিনি। চিকিৎসাও নিচ্ছেন টয়লেটের চাকরি অর্থ দিয়ে। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক ও মনরোগ বিশেষজ্ঞ পঞ্চানন আচার্যের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, নব্বই দশকে গড়ে উঠে ব্যান্ডদল ‘ব্লু হরনেট’। চট্টগ্রামের মহসিন কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় ৬ বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ডটি। ব্যান্ডদল ‘ব্লু হরনেট’-এর ভোকাল ছিলেন মনসুর হাসান। মনসুর হাসানের কণ্ঠে ‘বাটালি হিলের সেই বিকেল’, ‘ছোট্ট একটি মেয়ে’, ‘নিঝুম রাত’, ‘নীল কাগজে লেখা’, ‘মনটা তার চোরাবালি’, ‘চল যাই’, ‘বাতাসি’ ও ‘সবাই যখন ঘুমে’ অন্যতম। ‘কত না বছর’সহ বেশ কিছু গান ওই সময় জনপ্রিয় হয়।

১৯৯০ সালে মনসুরের সুর করা ও এলআরবির আইয়ুব বাচ্চুর কম্পোজে বের হয় তার একক অ্যালবাম। অ্যালবামটির প্রায় সব গানই শ্রোতাদের মন জয় করে। তার একক অ্যালবাম ‘জুয়েল স্বরণে’ ১৪টি গানের সব গানই মৌলিক হওয়ায় সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান মনসুর।

এসএইচ-৩০/৩০/২২ (বিনোদন ডেস্ক)