নৌকার নমিনেশন না পেয়ে লাইভে যা বললেন সিদ্দিকুর

ঢাকার অভিজাত একাধিক এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে বইছে ভোটের হাওয়া। আগামী ১৭ জুলাই আসনটিতে হবে উপনির্বাচন। বর্তমান সংসদের পাঁচ মাস বাকি থাকলেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার দৌঁড়ে ছিলেন ক্ষমতাসীন দলটির রাজনীতিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও তারকারা। এর মধ্যে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানও।

মনোনয়ন সংগ্রহের পর ওইদিন ছোটপর্দার রম্য এই অভিনেতা বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মনোনয়ন বোর্ড যদি আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেন, তাহলে আমি এ আসনে ফারুক ভাইয়ের অসম্পূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়ন করব।’

কিন্তু সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে মনোনীত করা হয়। পরে গণভবনের বাইরে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

এদিকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানের। এরপর গভীর রাতে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-১৭ আসনের জন্য আমাকে সিলেকশন করেননি। সে কারণে একটু মন খারাপ।’

‘কিন্তু মন খারাপ হলে মানুষ কী করে, মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায়। সেজন্য আমিও ‍ঘুরতে আসছি দুবাইয়ে এবং কেনাকাটা করতে। অনেকেই আছে যে মন খারাপ হলে ঘুরলে এবং কেনাকাটা করলে মন ভালো হয় আমারও তাই। আমি আওয়ামী লীগের লোক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ এবং প্রধানমন্ত্রীর আদর্শের সৈনিক। নৌকার মানুষ আমি। আমি সেই জায়গা থেকে বলতে চাই ঢাকা-১৭ আসন থেকে যাকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে আমি সত্যিকার অর্থে মানুষটার পক্ষেই কাজ করব, নৌকার পক্ষে কাজ করব। কারণ, আমি নৌকার বাইরের মানুষ না। আমি আওয়ামী লীগের,’ বলেন এই অভিনেতা।

ওই ভিডিও বার্তায় সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যারা যারা এই নৌকার মাঝি হওয়ার জন্য নমিনেশন পেপার উঠিয়েছিলেন আমি ছাড়াও ২১ জন। এই ২১ জনের মধ্যে আমার বাবার সমতুল্য মানুষও ছিল। আমি তাদের একটা কথা বলতে চাই- দিনশেষে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সৈনিক হয়ে বাঁচতে চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে বাঁচতে চাই। সেজন্য আমি বলব, আসুন আমরা সবাই মিলে উন্নয়নের মার্কায়, নৌকার পেছনে থাকি। নৌকাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করার দরকার সেগুলো করি।’

ছোটপর্দার এই অভিনেতা বলেন, ‘আমি বলতে চাই প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকার কাণ্ডারী করে ঢাকা-১৭ আসনের জন্য নমিনেশন দিয়েছে আমরা সবাই যদি তার জন্য কাজ করি, আমার মনে হয় সেটা হবে সত্যিকারে আওয়ামী লীগের পরিচয় দেওয়া। আমি আশা করব গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট এবং ভাষানটেক এলাকার মানুষগুলো একত্রিত হয়ে নৌকাকে জয়ী করবে আগামী উপনির্বাচনে।’

সিদ্দিকুর বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে হয়ত বা আমাদের কে দেখতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন যে তার যোগ্যতার মাপকাঠিতে আমরা আসলেই যোগ্যতা অর্জন করেছি তাহলে এখান থেকে আমাদের যে কারও একজনকে দেখতে পারেন এই ঢাকা-১৭ আসনের জন্য বা বাংলাদেশের অন্য একটা জায়গার জন্য। সর্বপরি সবাইকে বলব অচিরেই ফিরে আসব বাংলাদেশে। সবাই ভালো থাকবেন, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসতে পারি।’

গত ১৫ মে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মৃত্যুবরণ করার পরে এই আসনটি শূন্য হয়। পরে গত ১ জুন এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী আগামী ১৭ জুলাই হবে নির্বাচন। ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে।

ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। এর আগে ৬ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সবাই।

এসএইচ-০৭/১০/২৩ (বিনোদন ডেস্ক)