কাশতে কাশতে বের হয়ে এলো ‘ফুসফুস’!

কাশতে কাশতে

আমাদের দেশে শীত তেমন একটা পড়েনি এখনো। কিন্তু মেরুর কাছাকাছি দেশগুলোতে শীত মানে একদম বরফে ঢেকে যাওয়া কয়েকটি মাস। তাদের ঠাণ্ডা লেগে যায় খুব সহজেই। নাক দিয়ে পানি পড়তে থাকে, কাশি হতে থাকে। এমনকি তাদের একটি প্রবাদ প্রচলিত, ‘কফিং আপ অ্যা লাং’ অর্থাৎ এমনই তীব্র কাশি যাতে ফুসফুস মুখ দিয়ে বের হয়ে আসতে চায়। এটা নিতান্তই প্রবাদ, দমকা কাশি বোঝাতে ব্যবহার হয়। কিন্তু এক দুর্ভাগা ব্যক্তির জন্য সেটাই সত্যি প্রমাণিত হয়েছে।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে ৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির জীবনে ঘটে যাওয়া অবিশ্বাস্য এই ঘটনা বর্ণনা করা হয়। বলা হয়, তিনি কাশতে কাশতে এমন এক জিনিস মুখ দিয়ে বের করেন, যা দেখে মনে হয় তার ফুসফুস বের হয়ে এসেছে। ডাক্তাররা বলেন, এই জিনিসটি ছিল তার ব্রঙ্কিয়াল ট্রি এর একটি ছাঁচ। মূলত তার ফুসফুসের ভেতরে রক্ত জমে ফুসফুসের এই ছাঁচ তৈরি হয় ও তা কাশির সাথে বের হয়ে আসে।

জেনে রাখা ভালো, সুস্থ-স্বাভাবিক একজন মানুষের এমনটা হবার ঝুঁকি নেই। ৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ইতোমধ্যেই খুবই অসুস্থ ছিলেন। তার কিছুদিন আগে হার্ট ফেইলিওর হয়েছিল ফলে তার হৃৎপিণ্ড শরীরের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ রক্ত সঞ্চালন করতে পারছিল। তার আরও একটি সমস্যা ছিল, যাকে বলে অ্যাওর্টিক স্টেনোসিস। তার একটি পেসমেকারও ছিল। এরপর ডাক্তাররা তার শরীরে আরও একটি যন্ত্র যোগ করে। এই যন্ত্রটি তার শরীরে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। এরপর তাকে হেপারিন ওষুধটি দেওয়া হয়, যা আর্টারির ব্লকেজ দূর করার একটি অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট (রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়)।

কিন্তু এরপর ওই ব্যক্তির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। অপারেশনের পর তিনি অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। তার কফের সাথে রক্ত আসতে থাকে। তার ফুসফুসের রক্তনালীকা থেকে রক্ত লিক করতে থাকে। এরই একটি পর্যায়ে দমকা কাশির সাথে বের হয়ে আসে এই ‘ফুসফুস’। এরপর ২ দিনের মাঝে অবশ্য তার কাশির সাথে রক্ত আসা বন্ধ হয়।

তার ওই ‘ফুসফুস’ ভাইরাল হয়ে যায় ইন্টারনেটে। এর ছবি দেখে একই সাথে আতঙ্কিত এবং অভিভূত হয়ে যায় সবাই।

দুঃখের বিষয় হলো, এরপরে ওই রোগী সপ্তাহখানেকের মাঝে মারা যান। তবে ফুসফুসের সমস্যার জন্য নয়, বরং হৃদরোগের কারণেই মারা গেছেন তিনি।

আরএম-১২/০৭/১২ (অনলাইন ডেস্ক, তথ্যসূত্র: আইএফএলসায়েন্স)