গর্ভপাত করাতে আদালতের দ্বারস্থ

ভ্রুণের গঠনে ত্রুটি ধরা পড়ায় তা গর্ভপাত করাতে চান এক তরুণী। গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে ভারতের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, ওই তরুণীর গর্ভের ভ্রূণের গঠনে বড়সড় জিনগত ত্রুটি রয়েছে। এর মধ্যে পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ সপ্তাহ। আইন অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত করাতে হলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।

এর আগেও এ রাজ্যেরই এক মহিলাকে ২৮ সপ্তাহে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সে ক্ষেত্রে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টে কড়া নেড়েও বিফল হতে হয় সেই তরুণীকে। এ বার অবশ্য কলকাতা হাইকোর্ট মামলাটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে শুনানির ব্যবস্থা করেছে। বৃহস্পতিবার আবেদনকারীর আইনজীবী বিষয়টি দ্রুত শুনানির আবেদন করার পর আদালত রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদারকে ডেকে সহযোগিতার পরামর্শ দেয়। শুক্রবার ফের মামলাটি উঠবে। মামলায় যুক্ত সব পক্ষকে ওই দিন উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যায় তাঁর গর্ভের ভ্রূণের মস্তিষ্ক সাধারণের তুলনায় কম পুষ্ট। এসএসকেএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাঁদের রিপোর্টে দ্রুত গর্ভপাতের জন্য তরুণীকে বলেন। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী, ওই ভ্রূণ জন্মালে তাকে বেশি দিন বাঁচানো যাবে না। দ্রুত গর্ভপাত না করালে আরও ক্ষতির আশঙ্কাও প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ সপ্তাহ।

এ দিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে দ্রুত মামলাটি শোনার জন্য আবেদন করেন আবেদনকারীর আইনজীবী অমিতাভ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‌২০ সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পরে গর্ভপাতের ক্ষেত্রে যেহেতু আইনত বাধা রয়েছে, তাই এখন আদালতের অনুমতি লাগবে। দেরি হলে অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে পারে।’‌ এরপরই আদালত দ্রুত মামলাটি শুনানির উদ্যোগ নেয়। সাত বছরের বিবাহিত জীবনে এর আগেও একবার গর্ভপাত করাতে হয়েছিল ওই তরুণীকে। আবারও একই পরিস্থিতি হওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে তরুণী সহ পরিবারটি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, গর্ভপাতের মতো অন্য বেশ কিছু জটিল শারীরিক সমস্যা কাটাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে স্থায়ী বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে এ রাজ্যেও এলাকা বা জেলাভিত্তিক এই ধরনের বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্য কর্তাদের বক্তব্য, আদালত কোনও নির্দেশ দিলেও তা দেবে বোর্ডের পরামর্শ মেনে।

এসএইচ-০২/১২/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)