নবজাতকের প্রাণ জাগিয়ে ডাক্তারের মৃত্যু

সদ্যোজাতর শরীরে প্রাণ জাগিয়ে প্রাণ হারালেন চিকিৎসক। মঙ্গলবার সকালে হাসি–কান্নার এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী রইলেন ভারতের পাঁশকুড়ার পাতন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা করাতে আসা রোগী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃত চিকিৎসকের নাম বিভাস খুটিয়া (৪৮)। তাঁর বাড়ি পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার এলাকায়। হাসপাতাল অন্ত প্রাণ ছিলেন অবিবাহিত বিভাসবাবু। ২৪ ঘণ্টাই হাসপাতালে থেকে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে মর্মাহত সকলেই।

সোমবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের করন্দার বাসিন্দা সন্তানসম্ভবা সোনালি কুইলা ভর্তি হন পাতন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মঙ্গলবার সকালে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক বিভাস খুটিয়া ও নার্স পারমিতা বেরা প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করেন। ১১টা নাগাদ সোনালি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

কিন্তু জন্মানোর পর শিশুটি কেঁদে ওঠেনি। যে কারণে চিকিৎসক মেয়েটিকে ট্রেতে নিয়ে ওয়ার্মারে দেন। এরপর তিনি নিজেই সদ্যোজাত শিশুটির বুকে কম্প্রেসার দিতে শুরু করেন। ওই সময় আচমকাই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান। ওয়ার্মার–সহ উল্টে পড়ার সময় লেবার রুমের কর্মী রামপ্রসাদ রায় তাঁকে ধরে ফেলেন। দ্রুত স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে অক্সিজেন দেওয়া হয় বিভাসবাবুকে। এরপর পঁাশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তঁার মৃত্যু হয়।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‌লেবার রুমে আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পাতন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক বিভাসবাবুর মৃত্যু হয়েছে।’‌ নার্স পারমিতা বেরা বলেন, ‘‌অন্যান্য দিনের মতো এদিনও স্বাভাবিকভাবে লেবার রুমে প্রসব করানোর জন্য ঢোকেন ডাক্তারবাবু।

প্রসব করানোর পর তিনি শিশুকন্যাটিকে কাঁদানোর চেষ্টা করছিলেন। তখনও কোনও অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। যখন বাচ্চাটির বুকে কম্প্রেশার দিচ্ছিলেন, তখন আচমকাই অচৈতন্য হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে আমরা বাচ্চাটিকে স্বাভাবিক করি। এরপরই জানতে পারি ডাক্তারবাবু আর বেঁচে নেই। ঘটনায় আমরা সকলেই হতবাক।’‌‌

এসএইচ-০৩/১৬/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)