প্রেম-বিয়ে-প্রেগনেন্ট, সংসারটাই হলো না ফারজানার!

প্রেম-বিয়ে-প্রেগনেন্ট

নানা বাড়িতে বড় হয়েছে ফারজানা (ছদ্মনাম)। বাবা সামান্য দিনমজুর। কিছুদিন আগে তিনি এসেছেন তার বাবা-মার কাছে।

বাবা-মার কাছে আসার পরে ফারজানা ভর্তি হয় এখানকার এক কলেজে। এখানে তার সাথে অনেকের বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুদের কাছ থেকে শিখেন কিভাবে ফেসবুক চালাতে হয়। এরপর হঠাৎ একদিন ফারজানার কাছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় একই এলাকার শাহাদাত (ছদ্মনাম)। রিকেয়েস্টটা এক্সেপ্টও করে ফারজানা।

এরপর তাদের মাঝে অল্প-স্বল্প মেসেজ আদান-প্রদান হতে থাকে। এক পর্যায়ে ফারজানার ফোন নাম্বার নেয় শাহাদাত। তারপর তারা দু’জনে একে-অপরের সাথে অনেকটা সময় কাটায়। ফোনে কথা বলে। এক পর্যায়ে শাহাদাত ফারজানাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়।

কিন্তু ফারজানা জানতে পারে শাহাদাত এর আগে একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল। ফারজানা অসম্মতি জানালে শাহাদাত তাকে বলে এখন আর তার সাথে কারও সম্পর্ক নেই। সে ফারজানা কে অনেক ভালোবাসে।

এরইমধ্যে ফারজানার বিয়ের জন্য পাত্র দেখা শুরু করে তার পরিবার। এ সময় শাহাদাত ফারজানাকে জানায় সে ফারজানা কে বিয়ে করতে চায়। রাজি হয় ফারজানাও। তার ভালো লাগে শাহাদাতকে। শাহাদাত জানায় সে এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দিবে আর পরীক্ষা শেষ হলেই সে ফারজানাকে বিয়ে করবে।

এরপর ফারজানাকে দেখা করতে বলে শাহাদাত। এ সময় শাহাদাত ফারজানাকে বলে তারা এখনই বিয়ে করে ফেলবে এবং শাহাদাতের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হলে বাসায় জানাবে। কিন্তু তার আগে শাহাদাতের একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে হবে। যার জন্য কিছু টাকার দরকার।

ফারজানার জানায় সে আগে যেখানে (তার নানু বাড়ি) থাকত সেখানে তার একটি সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট আছে। যেখান থেকে সে চাইলে ঋণ নিতে পারে। শাহাদাত ও রাজি হয় ফারজানার প্রস্তাবে।

শাহাদাত বলে ঋণ নিলে সে ব্যবসা করে ফারজানার টাকা পরিশোধ করে দিবে।

এরপর ওই সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট থেকে ফারজানা ঋণ নিয়ে শাহাদাতকে ৯০ হাজার টাকা তুলে দেয়। শাহাদাত সে টাকা দিয়ে একটি ছোট দোকান দেয়। এরপর কিছুদিন গেলে শাহাদাত জানায় তার ব্যবসায় লোকশান হয়েছে। তার আরও কিছু টাকা লাগবে। এরপর সার্বিক দিক বিবেচনা করে ফারজানা নিজের কানের দুল ও আংটি বেঁচে শাহাদাতকে আরও ১৫ হাজার টাকা দেয়।

এরপর কিছুদিন না যেতেই আবারও শাহাদাত ফারজানার কাছে টাকা চায়। কিন্তু ফারজানা জানায় সে শাহাদাতকে আর টাকা দিতে পারবে না। শাহাদাতকে আগে ফারজানাকে বিয়ে করতে হবে। তাহলে ফারজানা শাহাদাতকে আরও টাকা দিবে। এরপর এক কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে ফারজানাও শাহাদাত।

বিয়ের পর সপ্তাহখানেক ভালো গেলেও কয়েকদিন পরেই ফারজানার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে শাহাদাত। এরপর নানান সময় শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতো ফারজানা ও শাহাদাত।

এক পর্যায়ে এক প্রতিবেশীদের হাতে ধরা খায় শাহাদাত ও ফারজানা। ডাকা হয় দুই পরিবারের লোকজন। কিন্তু শাহাদাতের মা এ বিয়ে মেনে নিতে চায়না। বরং শাহাদাতকে অন্য এক জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর ফারজানা তার বাবা-মার সঙ্গে তার বাড়িতে ফিরে যায়। ফারজানা তার বাবাকে নিয়ে একটি মামলা করেন শাহাদাতের বিরুদ্ধে।

কিন্তু দেখা যায় কিছুদিন বাদেই সে প্রেগনেন্ট। আরও চিন্তিত হয়ে পড়ে ফারজানা। বিষয়টি জানানো হয় শাহাদাতের বাসায়। কিন্ত এরই মধ্যে হুট করে অন্য একটি বিয়ে করে বসে শাহাদাত। এরপর পরিবারের চাপে নিজের গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে হয় ফারজানাকে। আর মামলাটিও তুলে নিতে হয় শাহাদাতের পরিবারের হুমকি-ধমকির মুখে।

(এই লেখাটি বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ফাঁদ অনুষ্ঠানের অবলম্বনে করা)

আরএম-০২/১২/০২ (অনলাইন ডেস্ক)