মাছ পাহারায় বিড়াল!

আদরের পুষির সামনে কখনো মাছ রেখে ভুল করে কোথাও চলে গেলেন। হঠাৎ মনে হলো- এই যাহ! পুষির সামনেই মাছ রেখে এলাম। মাছটা আস্ত পাব কি না কে জানে, যা মনে করেছিলেন ঠিক তা-ই হলো। মাছ নেই। আদরের বিড়ালটা মাছ নিয়ে উধাও। এর ব্যতিক্রম হবে না- এটাই স্বাভাবিক। কারণ বিড়ালের প্রিয় খাবার মাছ।

তবে ব্যতিক্রমী নির্লোভ এক বিড়ালের খোঁজ দিল ভারতীয় একটি গণমাধ্যম। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার। বিড়ালটিকে সবাই আদর করে ডাকে পুষু। মাছের লোভ টলাতে পারে না তাকে। বরং কঠোর নিরাপত্তারক্ষীর মতো মাছ পাহারা দেয় নির্লোভ পুসু।

অবিশ্বাস্য মনে হতেই পারে। হুলো বিড়াল পুসুকে দেখলেও এভাবেই বিস্মিত হন স্থানীয়রা। সামনে মাছ দেখেও দিনের পর দিন দূরে বসে কেবল নজরই রেখে চলে সে। তাকে স্বেচ্ছায় কেউ মাছ এগিয়ে না দিলে কখনোই সে তাতে মুখ দেয় না। সকলের আদরের পুসু প্রতিদিনই মাছের বাজারে এসে বসে। তবে মাছের থেকে খানিকটা দূরেই বসে সে। মাছ বিক্রেতার অনুপস্থিতিতেও কখনও জ্বলজ্বলে চোখ জোড়া নিয়ে এগিয়ে যায় না সেদিকে। শান্ত-নিরীহ স্বভাবের বিড়ালটির মনে কোনো লোভ নেই। আক্ষরিক অর্থেই যেন সে ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানে না।

বিড়ালের প্রিয় খাদ্য যে মাছ- একথা তো সবারই জানা। এক টুকরো মাছের জন্য কী কাণ্ড সে ঘটাতে পারে, তা কল্পনাও করা যায় না। গৃহস্থের ঘরে বেড়ালের মাছ চুরি করে নেয়া এক সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু হুলো পুসু এক্ষেত্রে একেবারে ব্যতিক্রমী।

ঝাড়গ্রামের ঘোড়াধরা এলাকার ঝাড়গ্রাম থানার উলটোদিকে গত প্রায় দেড় বছর ধরে মাছের ব্যবসা করছেন সুকুমার দাস। ফুটপাতের ধারে তার মাছ ব্যবসা। ঘটনাটি এলাকার লোকের কাছে অত্যন্ত পরিচিত দৃশ্য। সুকুমার মাছ ব্যবসার ফাঁকে কোনো কাজে গেলে দেখা যায় একপাশে চুপচাপ বসে রয়েছে পুসু আর নজর রাখছে মাছের ওপর। কখনোই সুকুমারের অজান্তে মাছে মুখ দেয় না সে।

সুকুমার বলেন, ‘আমরা সবাই ওকে আদর করে পুসু বলে ডাকি। খুব ছোট অবস্থায় ওকে এখানে প্রথম দেখা গিয়েছিল। তখন থেকেই এখানে আছে। ওর স্বভাব এত ভালো যে মুখে প্রকাশ করা যায় না। মাছের পাশে চুপ করে বসে থেকে সব লক্ষ্য রাখে। আমি নিজে মাছ না দিলে ও খাবেই না। আমি কখনো উঠে গেলে একপাশে বসে থেকে মাছ পাহারা দেয়। আর আমিও নিশ্চিন্তে থাকি। আগে খুব রোগা ছিল। এখন ও বেশ সুস্থ।’

এসএইচ-২৩/১৪/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)