ছেলেধরা সন্দেহে বৃদ্ধকে গণপিটুনি

ফের ছেলেধরা সন্দেহে এক বৃদ্ধকে গণপিটুনি। এবার কেতুগ্রামের বিল্বেশ্বরে। নিগৃহীত বৃদ্ধ দিলীপ সর্দারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। নিগ্রহের ঘটনায় পুলিশ কেষ্ট মাঝি নামে বিল্বেশ্বরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।

জানা গেল, দিলীপ সর্দার নামে ওই বৃদ্ধ মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে মাঝে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করেন। বিল্বেশ্বর গ্রামে তাঁকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় গ্রামের লোকজনের। ঘিরে ধরে শুরু হয় গণপিটুনি। এই ঘটনার পর এলাকায় আরও বেশি বেশি করে সচেতনতা প্রচারে জোর দিয়েছে পুলিশ।

এদিকে কালনায় গণপিটুনির জেরে দু’‌জনের মৃত্যুর ঘটনায় এবার আদালতে সাক্ষ্যদানের জন্য সিএফএসএল (সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি)–র আর এক কর্তাকে সমন পাঠাল কালনা মহকুমা আদালত। আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে পি পাল রমেশ নামে ল্যাবরেটরির পদার্থবিদ্যা বিভাগের ওই কর্তার সাক্ষ্যের দিন ঠিক হয়েছে দোসরা এপ্রিল। তাঁকে ঘটনার ছবি ও ভিডিও–র বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মাসখানেক আগে সিএফএসএলের আর এক কর্তা বিভাগীয় ডিরেক্টর কাননবালা জেনার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

তিনি আদালতে হাজির হয়ে জানান, পুলিশের পাঠানো মোবাইল এবং সিডি থেকে একটি ডিভিডি বানিয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে পাঠিয়েছেন। একথা জানার পরই আদালত পদার্থবিদ্যা বিভাগের ওই আধিকারিককে তলব করল আদালত। তবে এর আগে আদালতে পদার্থবিদ্যা বিভাগের একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। আদালত সূত্রের খবর, এই মামলার শুনানি পর্ব শেষের দিকে। পুলিশের উদ্ধার করা সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনার ভিডিও আদালতে দেখানো হয়েছে।

বিচারক ও দুই তরফের আইনজীবীরা সেই ভিডিও দেখেছেন। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি নিছক গুজবের জেরে ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাইয়ে মৃত্যু হয় দু’‌জনের। কালনা শহরের বারুইপাড়ার ঘটনায় মৃত্যু হয় নদিয়ার হবিবপুরের বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র দাস ও মানিক সরকারের। গুরুতর জখম বিজন বিশ্বাস, মানিক দাস ও মধুমঙ্গল তরফদার দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হন। হতাহতরা সেদিন প্রত্যেক বছরের মতো আমগাছে কীটনাশক স্প্রে করতে এসে একটি জায়গায় বসে গল্পগুজব করছিল। প্রথমে মোট ৯ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ঘটনার ভিডিও দেখে পুলিশ আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করে এক নাবালক–সহ মোট ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে। ঘটনার ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। চার্জশিটে মোট ৪৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরমধ্যে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৮ জন জামিনে মুক্ত রয়েছে। সেদিনের ঘটনায় আহতরা আদালতে হাজির হয়ে ৫ জনকে শনাক্ত করেছে। কালনার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষজন চাইছেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা।

এসএইচ-০৫/২৪/১৯ (অনলাইন ডেস্ক)